ঠিকাদারের অনিয়মে সড়ক নির্মাণ বন্ধ করল এলজিইডি

জামালপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৮ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:১৪

জামালপুর সদরের কেন্দুয়ায় চার কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়দের তোপের মুখে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে ওই সড়কের নির্মাণকাজ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

গত বুধবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দরপত্রের শর্তানুযায়ী চার ফুট প্রশস্ত এই রাস্তার কাজের মধ্যে ইটের খোয়া আর বালি দিয়ে ছয় ইঞ্চি পুরুত্ব করে ম্যাকাডম কাজ করার কথা থাকলেও মাত্র তিন থেকে চার ইঞ্চি পুরুত্ব করে নিম্নমানের ইটের খোয়া এবং বালি কম দিয়ে মাটি মিশিয়ে ম্যাকাডম করা হয়েছে।

এলাকাবাসীদের অভিযোগ, দরপত্রে রাস্তার দুই পাশে তিন ফুট করে মাটি কেটে প্রশস্ত করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। রাস্তার দুই পাশে পুকুর, ডোবা বা ঢালু স্থানে প্যালাসাইটিং নির্মাণের কথা থাকলেও তা করেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এছাড়া ম্যাকাডমের কাজ শেষে প্রায় দেড় বছর ধরে ফেলে রাখায় সড়কটির বিভিন্ন স্থানে দেবে গেছে। গেল বন্যায় রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রাস্তার দুই পাশে অনেক স্থানে মাটি ধ্বসে গেছে।

বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট এলজিইডির প্রকৌশলীদের জানালেও তারা কোনও ব্যবস্থা না নেয়ায় স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে দ্রুত কাজ শেষ করতে ওই ম্যাকাডমের ওপর ২৫ মিলিমিটার পুরুত্ব করে বিটুমিনাস কার্পেটিংয়ের কাজ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে দিয়েই করিয়ে নিতে উদ্যোগ নেন সম্প্রতি যোগদানকারী সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. রমজান আলী।

তবে নিম্নমানের ম্যাকাডমের ওপর গত মঙ্গলবার থেকে কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করেন সাব ঠিকাদারের লোকজন। রাস্তার ওই অবস্থায় কাজ না করার জন্য বাধা দিলে ঠিকাদার তা তোয়াক্কা না করে কাজ করার চেষ্টা করে।

একপর্যায়ে স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে বুধবার সকালে রাস্তাটির কয়েকটি স্থানে শাবল দিয়ে ম্যাকাডম খুঁড়ে খুবই নিম্নমানের কাজের নমুনা দেখতে পান। কার্পেটিংয়ের কাজ বন্ধ করে নতুন করে রাস্তার ম্যাকাডম কাজ সম্পন্ন করে তারপর কার্পেটিংয়ের কাজ করার দাবি জানান তারা।

এরইমধ্যে প্রকৌশলী মো. রমজান আলী মোল্লাপাড়ায় গিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি নিজেও নিম্নমানের ম্যাকাডমের অস্তিত্ব দেখতে পান। একইসঙ্গে তিনি রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ বন্ধ রাখতে ঠিকাদারকে নির্দেশ দেন। এরপর থেকে সেখানে কাজ বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক তোতা এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘জামালপুর-ঢাকা মহাসড়কের সাথে যুক্ত গ্রামীণ জনপদের পুরনো রাস্তাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাস্তাটি নির্মাণ কাজ খুবই নিম্নমানের হচ্ছে। এত রাস্তাটি বেশিদিন টিকবে না। রাস্তাটি নতুন করে ভালোমতো ম্যাকাডম ও কার্পেটিং করে নির্মাণ করা দরকার।’

সংশ্লিষ্ট কাজের সাব-ঠিকাদার মো. কামরুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘রাস্তা নির্মাণ কাজে কোনো অনিয়ম করা হয়নি। গ্রামবাসী যেখানে খারাপের কথা বলছেন প্রয়োজনে সেখানে ম্যাকাডম ঠিক করে দেওয়া হবে।’

এদিকে এলজিইডির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে, আড়াই কোটি টাকার ওই কাজে এরইমধ্যে দেড় কোটি টাকার বিল তুলে নিয়েছেন ঠিকাদার। অবশিষ্ট এক কোটি টাকা দিয়ে পুরো কাজ উঠানো আদৌ সম্ভব কি না এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলজিইডি সংশ্লিষ্টরা।

(ঢাকাটাইমস/৮নভেম্বর/প্রতিনিধি/এএইচ/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :