লাখো মানুষের সাধুবাদে কঠিন চীবর দান সম্পন্ন

প্রকাশ | ০৮ নভেম্বর ২০১৯, ১৯:১৭

রাঙামাটি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

রাঙামাটি রাজবন বিহারে ৪৬তম কঠিন চীবর দান শেষ হয়েছে। সমাপনী দিনে তুলা থেকে সুতা কাটাসহ কোমর তাঁতের মাধ্যমে বুনন প্রক্রিয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তৈরি কঠিন চীবর শুক্রবার দুপুর ২টায় বুদ্ধ ভিক্ষু সংঘের উদ্দেশে দান করেছেন পূণ্যার্থীরা। দেশ ছাড়াও থাইল্যান্ড, ভারতসহ কয়েকটি বৌদ্ধ প্রধান দেশ থেকে পূণ্যার্থীরা এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

দুপুর ২টায় রাজবন বিহারের পশ্চিম পাশের মাঠে চীবরটি উৎসর্গ শেষে রাজবন বিহার অধ্যক্ষ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবিরের হাতে তুলে দেন রাজবন বিহারের পৃষ্ঠপোষক চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। এ সময় হাজার হাজার পূণ্যার্থীর সাধুবাদে মুখরিত হয় রাজবন বিহার এলাকা।

এর আগে রাজবন বিহার এলাকায় কঠিন চীবর প্রদক্ষিণ করানো হয়। এ সময় পূণ্যার্থীরা চীবরে বিভিন্ন দানীয়সামগ্রী দান করেন। চীবর প্রদক্ষিণ শেষে ভিক্ষু সংঘের কাছ থেকে পঞ্চশীল গ্রহণ করেন পূণ্যার্থীরা। পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন দেবাশীষ রায়। পঞ্চশীল প্রদান করেন ভদন্ত প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির।

এর আগে কঠিন চীবর দানকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পূণ্যার্থী কল্পতরু, চীবরসহ বিভিন্ন দানীয়সামগ্রী নিয়ে বনবিহারে হাজির হয়।

ধর্মসভায় বক্তব্য দেন- দেবাশীষ রায়, বনবিহারের উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি গৌতম দেওয়ান।

এসময় চাকমা রানী য়েন য়েন, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, রাঙামাটি সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইনুর রহমান, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনর রশীদ, পুলিশ সুপার আলমগীর কবির উপস্থিত ছিলেন।

ভিক্ষু সংঘের ধর্মদেশনা শেষে লাখো মানুষের সাধুবাদে শেষ হয় রাজ বনবিহারের ৪৬তম কঠিন চীবর দান।

তথাগত গৌতম বুদ্ধের সময় বিশাখা নামে এক পূণ্যবতী বুদ্ধকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তৈরি চীবর দান করেন। এ রীতি অনুসরণ করে ১৯৭৪ সাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে এভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। বুদ্ধ ভিক্ষুদের তিন মাস বর্ষাব্রত শেষে প্রবারণা পূর্ণিমার দিন থেকে এ কঠিন চীবর দানুষ্ঠান শুরু হয়। মাসব্যাপী কঠিন চীবর দান করা যায়। বছরে একটি বিহারে একবারই করা হয় এ দান। সে দান করতে হয় প্রবারণা পূর্ণিমা (আশ্বিনী পূর্ণিমা) থেকে কার্তিক পূর্ণিমার দিন পর্যন্ত।

(ঢাকাটাইমস/৮নভেম্বর/এলএ)