ঝড়ের বার্তা: কোন সংকেতের মানে কী?
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ প্রবল বেগে ধেয়ে আসছে। ইতিমধ্যে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে মোংলা-পায়রাসহ নয়টি জেলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরসহ পাঁচটি জেলায় ৯ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে দুর্যোগপূর্ণ ও সম্ভাব্য এলাকায় অবস্থানরতদের জন্য আবহাওয়ার ১১টি সংকেত রয়েছে৷ ১ থেকে ১১ পর্যন্ত এই সংকেতগুলো দুর্যোগে বিপদের আশঙ্কা কতটুকু তা নির্দেশ করে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জারি করা ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেতে বোঝায় জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার। ফলে সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হবে।
২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেতের মাধ্যমে দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে বোঝায়। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে বলে এই সংকেতের মাধ্যমে জানানো হয়। বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগ কবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ হতে ৫০ কিলোমিটার হতে পারে বোঝাতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেতের মাধ্যমে নির্দেশ করা হয়। বন্দর ঘূর্ণিঝড় কবলিত হলে এবং বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১ থেকে ৬১ কিলোমিটার গতিতে বয়ে চলার সম্ভাবনা থাকলে তা ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেতের মাধ্যমে জানানো হয়। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় এটি নয়।
৫ নম্বর সংকেতটি বিপদ সংকেত হিসেবে বিবেচিত হয়। এর মাধ্যমে বোঝানো হয়, বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
একই গতি ও তীব্রতা বন্দরকে ডান দিকে রেখে অতিক্রম করলে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেওয়া হয়।
আবার একইভাবে ঝড়টি বন্দরের উপর বা এর নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বুঝাতে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়।
বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে, ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে জানাতে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নির্দেশ করা হয়।
বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে, ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে নির্দেশ করতে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়।
১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত বলতে বোঝায়, বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশি হতে পারে।
আবহাওয়ার সর্বশেষ বা চূড়ান্ত সংকেতটি বিপদ সংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সাথে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করা।
(ঢাকাটাইমস/০৯নভেম্বর/কারই/জেবি)