১৫২৮ থেকে ২০১৯: বাবরি মসজিদ নিয়ে বিতর্কের ইতিহাস

প্রকাশ | ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ১২:১৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস

ভারতের সবচেয়ে আলোচিত জায়গার মধ্যে অন্যতম উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যার বাবরি মসজিদ নির্মিত জায়গা। এ নিয়ে মুসলিম-হিন্দুদের মধ্যে বেশ কয়েকবার ভয়াবহ দাঙ্গা সংগঠিত হয়েছে। নিহত হয়েছেন কয়েক হাজার লোক। বহু বছর ধরে চলা এই বির্তকের অবসান ঘটাতে শনিবার রায় ঘোষণা করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।

বর্তমানের বাবরি মসজিদের জায়গা হিন্দুদের এবং সেখানে রামমন্দির নির্মিত হবে বলে রায়ে বলা হয়েছে। আর মুসলিমদেরকে মসজিদ নির্মাণের জন্য বিকল্প জায়গা দেয়ার আদেশ দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে ভারতে আবারও বিশৃঙ্খল অবস্থার তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

১৫২৮ খ্রিস্টাব্দে অযোধ্যায় তৈরি হয় বাবরি মসজিদ। মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মীর বাকি বাবরি মসজিদ তৈরি করেন। হিন্দুদের কিছু সংগঠন দাবি করতে শুরু করে মন্দির গুঁড়িয়ে দিয়ে সেখানে তৈরি হয়েছে এই মসজিদ। ১৮৫৩ সালে প্রথম এই ইস্যুতে বিরোধ বাঁধে।

১৮৫৯ সালে ব্রিটিশরা একটি প্রাচীর দিয় হিন্দু ও মুসলিমদের প্রার্ধনার জায়গা আলাদা করে দেয়। ৯০ বছর ধরে এভাবেই ব্যবহৃত হয় জায়গাটি। ১৯৪৯ সালে প্রথম এই জমি সংক্রান্ত মামলা আদালতে যায়। সেইসময় রামের মূর্তি স্থাপন করা হয় মসজিদের ভিতরে।

১৯৮৪ সালে রাম মন্দির গড়ার দাবি নিয়ে হিন্দুদের একটি কমিটি তৈরি হয়। তিন বছর বাদে একটি জেলা আদালত নির্দেশ দেয়, যাতে ওই বিতর্কিত এলাকা হিন্দুদের প্রার্থনার জন্য খুলে দেওয়া হয়। মুসলিমরা তৈরি করে বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটি। এরপর ১৯৮৯ সালে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় ওই স্থানে। ১৯৯০ সালে রাম মন্দির তৈরির সমর্থনে রথযাত্রা করেন এলকে আদবানী।

১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে দেয় কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। দেশ জুড়ে দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরি হয়। ১০ দিন বাদে তৈরি হয় তদন্ত কমিটি। ১৭ বছর বাদে ২০০৯ সালে সেই কমিটি রিপোর্ট জমা দেয়। সেই রিপোর্টে আদবানী, বাজপেয়ীসহ ১৭ জনের নাম ছিল। ওই সময় দেশব্যাপী দাঙ্গায় দুই হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।

২০০৩ সালে এই মামলার জন্য আদালত সাতজন হিন্দু নেতাকে তলব করে, তার মধ্যে বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতাও ছিলেন। লখনউতে মুরলী মনোহর যোশী, উমা ভারতীর বিরুদ্ধে মামলা চলে। এবছরের জুলাই মাসে ডেডলাইন দিয়ে দেওয়া হয়, যাতে ৯ মাসের মধ্যে এই মামলার রায় ঘোষণা হয়।

২০১০ সালে এলাহবাদ হাই কোর্ট একটি রায় দেয়। তাতে বলা হয় ওই বিতর্কিত জমকিতে তিন ভাগে ভাগ করে দেওয়া হবে। নির্মোহী আখড়া, রাম লাল্লা ও সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

প্রথমে তিনজন মধ্যস্থতাকারী দেওয়া হয় এই মামলার জন্য। পরে, গত ৬ আগস্ট থেকে প্রত্যেকদিন এই মামলার শুনানি শুরু করে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপরির বেঞ্চ। ১৬ অক্টোবর সেই শুনানি শেষ হয়।

ঢাকা টাইমস/০৯নভেম্বর/একে