‘বুলবুলে’ লণ্ডভণ্ড সাতক্ষীরার শ্যামনগর

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০১৯, ১২:৩৭ | প্রকাশিত : ১০ নভেম্বর ২০১৯, ১২:২৯

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলে’র আঘাতে সাতক্ষীরায় উপকূলীয় এলাকা লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালীনি, মুন্সিগঞ্জ, রমজাননগর ও কাশিমাড়িসহ আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, আনুলিয়া, খাজরা ও শ্রীউলা এলাকার অধিকাংশ কাঁচা ঘর নষ্ট হয়ে গেছে। ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়েছে টিন-এলবেস্টার, পানিতে একাকার হয়ে গেছে মৎস্য ঘের, ধানের ক্ষেত। রাস্তায় গাছ পড়ে থাকায় উদ্ধার কাজে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, ঝড়ের পশ্চাৎভাগ সাতক্ষীরা অতিক্রম করেছে। বেলা সাড়ে ১১ থেকে ১২টার মধ্যে সাতক্ষীরা উপকূল অতিক্রম করে। এখন বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ঝড়ের সময় শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের চকবারা গ্রামের আবুল কালাম (৬০) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়া ভেটখালী ইউনিয়নের তারাণীপুরে দেওয়াল চাপা পড়ে ভ্যান চালক পলাশ ও তার স্ত্রী আহত হয়েছেন। তবে হতাহতের এই খবর সরকারি কোনো সূত্র নিশ্চিত করতে পারেনি।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, ‘ভারতে পশ্চিমবঙ্গের উপকূল হয়ে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল রবিবার ভোর ৫টা থেকে ৮১ কিলোমিটার বেগে সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হানে। সকাল ৯টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরায় ১৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, এখনো পর্যন্ত জেলায় সর্বশেষ খবর অনুযায়ী ২৫ হাজার হেক্টর আমন ধান, ১২ শত হেক্টর সবজি, ৫০০ হেক্টর সরিষা, ২০০ হেক্টর কুল ও ১২০ হেক্টর জমির পান নষ্ট হয়েছে।

গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের চার হাজার ঘর ভেঙে গেছে। মৎস্য ঘের তলিয়ে গেছে। এই অধিকাংশ গাছ উপড়ে গেছে। মানুষ এখন সাইক্লোন শেল্টারে এবং নিরাপদে আছে।’

বুড়িগোয়ালীনী ইউপি চেয়ারম্যান ভবতোষ মন্ডল বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে আমার ইউনিয়ন লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। বাতাসের তীব্রতা এত ছিলে যে, এখানকার অধিকাংশ গাছ উপড়ে গেছে। কাঁচা ঘর সব নষ্ট হয়ে গেছে, কাঁচা ঘরের টিন ও এ্যালবেস্টার উড়ে গেছে। চিংড়ি ঘের ও ধানের জমি পানিতে একাকার হয়ে গেছে। নদীতে পানি বাড়ছে আমার এলাকার কিছু বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ আছে সেগুলো সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে মেরামত করার চেষ্টা করছি। এখন জোয়ার চলছে সাধারণ মানুষের মধ্যে বাঁধ নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাস্তার গাছ সরাতে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী কাজ করছে।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল রবিবার ভোরে সাতক্ষীরা উপকূলের আঘাত হানে। এতে উপকূলীয় এলাকার অধিকাংশ কাঁচা ঘর নষ্ট হয়েছে। এই অঞ্চলের অধিকাংশ মাছের ঘের ও ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। গাছপালা পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী কাজ করছে। যাতায়ত ব্যবস্থা ভালো হওয়া মাত্র আমরা উদ্ধার কাজে নামবো।

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। রাস্তার উপর বড় বড় গাছ ভেঙে পড়েছে। শ্যামনগরের খানপুর, চন্ডিপুর, শ্যামনগর সদর, উত্তর বাঁধঘাটা, ইসমাইলপুর, হাইবাতপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় বড় বড় গাছ ভেঙে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ইতিমধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা রাস্তার-ঘাটে পড়ে থাকা গাছ অপসারণের কাজ শুরু করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/১০নভেম্বর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :