নামের মিলে কারাভোগ, রাজনকে মুক্তির নির্দেশ

প্রকাশ | ১১ নভেম্বর ২০১৯, ১৯:৪৩ | আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৯, ১৯:৪৫

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আসামি না হয়েও নামের মিলে গ্রেপ্তার হয়ে ২৬ দিন কারাভোগ করা কুমিল্লার যুবক রাজন ভূইয়াকে কারামুক্তির নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

সোমবার ঢাকার এক নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল ও বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এক টাকা বন্ডে এই কারামুক্তির  নির্দেশ দেন।

একই সঙ্গে রাজন ভূইয়াকে গ্রেপ্তারকারী কুমিল্লার ব্রাক্ষণপাড়া থানার উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আরশাদের বিরুদ্ধে কেন শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এই মর্মে আগামী ৪ ডিসেম্বর তাকে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশও দিয়েছেন।

অন্যদিকে আদেশে বিচারক সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ প্রশাসনকে মো. রাজন ভূইয়ার পরিবার-পরিজনকে কোনো ধরনের হয়রানির না করারও নির্দেশ দিয়েছেন।

রাজন ভূইয়ার আইনজীবী নিকুঞ্জ বিহারী আচার্য্য জানান, গত ১৬ অক্টোবর কুমিল্লার ব্রাক্ষণপাড়া থানার গোপালনগর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান ভূইয়ার ছেলে গাড়ির ওয়ার্কশপের কর্মচারী মো. রাজন ভূইয়াকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেন ব্রাক্ষণপাড়া থানার এসআই আরশাদ। পুলিশ যে পরোয়ানা মূলে তাকে গ্রেপ্তার করে সেখানে নাম লেখা ছিল মো. হাবিবুল্লাহ রাজন এবং পিতা- আব্দুল মান্নান। গ্রেপ্তারের পর পুলিশকে নামের এবং পিতা জীবিত ও মৃত্যের পার্থক্যের কথা বলা হলেও পুলিশ আমলে না নিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠায়। পরবর্তী সময়ে পরোয়ানায় যে মামলার নম্বর ছিল সে অনুযায়ী খোঁজ নিয়ে দেখতে পাই যে, মো. হাবিবুল্লাহ রাজন (২৬ বছর ২০১২ সালের চার্জশিট অনুযায়ী),  পিতা- আব্দুল মান্নান এবং গ্রামের ঠিকানা একই এলাকার। তবে রাজধানী ঢাকার রমনা থানাধীন মগরাজার এলাকায় আরেকটি ঠিকানা রয়েছে। সে ২০১২ সালের ৯ মে ২৮ পিস নেশাজাতীয় ইনজেকশনসহ রাজধানীর বংশাল থানাধীন তাঁতীবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয়। মামলায় চার্জশিট হওয়ার পর ২০১২ সালের ১ জুলাই বিচারিক আদালত জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন পেয়েই সে পলাতক হওয়ায় ২০১৩ সালের ৬ জুন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। সর্বশেষ গত বছর ১৮ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার পরোয়ানা জারি করে ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ও বিশেষ দায়রা জজ আদালত। ওই পরোয়ানা পেয়ে ব্রাক্ষণপাড়া থানার এসআই আরশাদ ভুল আসামি মো. রাজন ভূইয়াকে গ্রেপ্তার করে। যাকে বিনা দোষে ২৬ দিন জেলহাজতে থাকতে হলো।

এ আইনজীবী আরও বলেন, মামলার মূল আসামি পলাতক মো. হাবিবুল্লাহ রাজন (৩৩) গত ৭ নভেম্বর একই আদালতে আত্মসমর্পণ করতে এসেছিলেন। কিন্তু ভুল আসামি মো. রাজন ভূইয়া এ মামলায় কারাগারে থাকায় সেদিন আদালত তার আত্মসমর্পণ নিতে পারেননি। তাই আমাদের আবেদনের পর আদালত নিশ্চিত হন যে, গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা মো. রাজন ভূইয়া এ মামলার আসামি নন। তিনি পুলিশ খামখেয়ালি শিকার হয়েছেন। তাই আদালত রাজন ভূইয়াকে জামিন ও অব্যাহাতির আদেশ দিয়েছেন। 

(ঢাকাটাইমস/১১নভেম্বর/আরজেড/জেবি)