শিক্ষার্থীদের প্রাইভেটে চলে যেতে বললেন কুবি শিক্ষক!

প্রকাশ | ১১ নভেম্বর ২০১৯, ২৩:২৬

কুবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

শ্রেণিকক্ষ সঙ্কট নিরসন, পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা এবং শিক্ষক সঙ্কট সমাধানের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে দাবি ও আন্দোলন করে আসছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষধভুক্ত ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের পক্ষে দাবি জানাতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান শিক্ষার্থীদের আইসিটি বিভাগ ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘কটূক্তি’ ও ‘প্রাইভেটে চলে যেতে’ বলার অভিযোগ ওঠেছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

সোমবার দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা ৫টি দাবিতে বিক্ষোভ করেন। দাবিগুলো হচ্ছে- শ্রেণিকক্ষ সঙ্কট নিরসনে প্রকৌশল ভবন হস্তান্তর, আইসিটি মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত দুটো ল্যাবের সুষম বণ্টনের মাধ্যমে ল্যাবরুমের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতকরণ, শিক্ষক সঙ্কট নিরসন, আইসিটি বিভাগকে নিয়ে কটূক্তিকারী জনৈক শিক্ষকের বক্তব্য প্রত্যাহার এবং শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমাপ্রকাশ।

আন্দোলনরত আইসিটি বিভাগের কমপক্ষে ৫জন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিনের এসব সঙ্কটের দাবি নিয়ে গত ২৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের অফিসে যান তারা। শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি উপস্থাপনকালে রেজিস্ট্রার সেখানে উপস্থিত মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান তাদের কটূক্তি করে বলেন, ‘আপনাদের এতোই যখন সমস্যা, তখন এখানে ভর্তি হয়েছেন কেন? পার্শ্ববর্তী সিসিএন (নতুন একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়)-এ চলে যান।’

এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) এবার কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ দুটিকে একীভূত করে দিতেও বলেন বলে জানান উপস্থিত শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক মেহেদী হাসান জানান, ‘বিশ্বের অনেক দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফারের মাধ্যমে শিক্ষার আদান-প্রদান হয়। আমাদের যদি সঙ্কট থাকে, তবে পার্শ্ববর্তী কোনো প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিতে তো আমাদের সমস্যা নেই। এখানে তারা আমাকে ভুল বুঝেছে।’

তিনি আরও জানান, ‘শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম সমস্যা সমাধানে আমি প্রধানত বলেছি বাসের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়ে সকাল ৮টা থেকে ক্লাস শুরু করতে। তাহলে সমস্যা কমে আসবে।’

শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধানে আপনার কোনো বক্তব্য বা মন্তব্য প্রাসঙ্গিক কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি সেখানে অন্য একটি কাজে উপস্থিত ছিলাম। শিক্ষার্থীদের সাথে রেজিস্ট্রার স্যারের কথাবার্তা চলাকালে রেজিস্ট্রারের অনুমতি নিয়ে আমি কথা বলেছি। তবে তাদের সমস্যার সমাধান দেয়ার জন্য আমি প্রশাসনিক কোনো দায়িত্বশীল না।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দেয়া প্রতিটি দাবির সাথে আমি একমত। শিগগির তাদের জন্য ক্লাস ও ল্যাব বরাদ্দে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। এতে অন্য কোনো শিক্ষকের অযাচিত মন্তব্য প্রত্যাশিত নয়।’

শিক্ষার্থীদের প্রতি অভিযুক্ত শিক্ষকের তীর্যক মন্তব্যের নিন্দা করে রেজিস্ট্রার জানান, ‘আমার কাছে শিক্ষার্থীরা সমস্যা নিয়ে আসছে সেখানে আমি কথা বলছি। এর মধ্যে অন্য একজন শিক্ষক কথার মাঝখানে তাদের যা বলেছে তা আমারও খারাপ লেগেছে। কিছু লোক আছে যে, প্রয়োজন হলেও ইন্টারফেয়ার করে না হলেও করে। এদের স্বভাব সম্পর্কে ছাত্র-শিক্ষক সবাই অবগত আছে।’

(ঢাকাটাইমস/১১নভেম্বর/এলএ)