কসবায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা

হতাহত যাত্রীদের বেশিরভাগই ঘুমিয়েছিলেন

প্রকাশ | ১২ নভেম্বর ২০১৯, ০৮:০৮ | আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:২১

ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

দুটি ট্রেনের বেশিরভাগ যাত্রী যখন ঘুমে আচ্ছন্ন তখনই বিকট শব্দ ঘুম ভাঙে সবার। দুটি ট্রেনের সংঘর্ষে উদয়ন এক্সপেস ট্রেনের পেছনের কয়েকটি বগির আসনে থাকা যাত্রীরা সামনের সিটের সঙ্গে ধাক্কা খায়। মুহূর্তেই ঘুম ভাঙে সবার। কিছুক্ষণ আগেও যেখানে বিরাজ করছিল সুনসান নীরবতা মুহূর্তের মধ্যে সেখানে শুরু হয় মানুষের গণনবিদারী আত্মচিৎকার। আবার অনেকে ঘুমেই মধ্যেই চলে যান না ফেরার দেশে।

সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দবাগ এলাকায় তুর্ণা নিশীথা ও উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৫ জন নিহত হয়। আহত হয় ৩০ জনেরও বেশি। তুর্ণা নিশীথা ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। আর উদয়ন এক্সপ্রেস যাচ্ছিল সিলেট থেকে চট্টগ্রাম।

দুর্ঘটনার হাত থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া শরিফুল নামে এক যাত্রী দুর্ঘটনার ভয়াবহতার কথা বর্ণনা করেন। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনটির যাত্রী ছিলেন তিনি।

শরিফুল জানান, ট্রেনের প্রায় সব যাত্রীই ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভাঙে সবার। চোখ খুলেই দেখেন চারপাশে লণ্ডভণ্ড। ট্রেনের যাত্রীরা বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার করছেন। অনেক জায়গায় হতাহতদের রক্ষের ছাপ। যারা বেঁচে আছেন তাদের অনেকে জানালা দিয়ে লাফিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করছেন। আবার কেউ বের হতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। সে এক বীভৎস দৃশ্য। এসব কথা বলার সঙ্গে তিনি হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

শেষ রাতের ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনায় উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের পেছনের বেশ কয়েকটি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে তিনটি বগি প্রায় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। হতাহতদের বেশিরভাগই উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের পেছনের তিনটি বগির যাত্রী ছিলেন। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের নামপরিচয় জানা যায়নি।

দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। আহতদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতাল ও কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া বগির নিচে আরও মরদেহ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হতাহতদের উদ্ধারে এখনো অভিযান চলছে।

ঢাকাটাইমস/১২নভেম্বর/এমআর