কান্না থামছে না শিশুটির, খোঁজ মিলছে না মা-দাদির

প্রকাশ | ১২ নভেম্বর ২০১৯, ১২:০৪ | আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯, ১২:২৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দুটি ট্রেনের সংঘর্ষে কেটে গেছে শিশুটির মাথার বিভিন্ন অংশ। তারা পুরো মাথা ঢাকা আছে ব্যান্ডেজে। ব্যান্ডেজের ফাঁক গলে কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে রক্তের ছাপ। তার নাকেও আছে দুর্ঘটনায় ক্ষতের চিহ্ন।

ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকা ছোট্ট শিশুটি অঝর কাঁদছে। শিশুটি যাদের সঙ্গে ট্রেনে উঠেছিল দুর্ঘটনার পর মা-দাদির সন্ধান মিলছে না। স্বজনদের জন্য শিশুটি শুধু অনবরত কাঁদছে। অনেক চেষ্টা করেও তার কান্না থামানো যাচ্ছে না। স্বজন ছাড়া হাসপাতালে থাকা শিশুটির কান্না দেখে অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। আবেগাপ্লুত হয়ে অনেকে শিশুটিকে কাছে টেনে নেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষের পর শিশুটিতে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক যাত্রী।

দুর্ঘটনার পরপরই রেল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তিনটি ইউনিট এবং পুলিশ সদস্যরাও যোগ দেন। আহত অর্ধশতাধিক যাত্রীকে কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আহত শিশুটিকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে ভর্তির পর শিশুটির পরিচয় জানা যাচ্ছিল না। শিশুটির স্বজনদের সন্ধান পেতে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছবি পোস্ট করেন। কয়েক ঘণ্টা পর শিশুটির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়। তার চাচা মানিক শিশুটির পরিচয় নিশ্চিত করেন।

শিশুটির নাম নাইমা। চাঁদপুরে যাওয়ার জন্য মা ও দাদীর সঙ্গে সিলেট থেকে ট্রেনে করে ফিরছিল শিশুটি। দুর্ঘটনা থেকে শিশুটি বেঁচে ফিরলেও তার মা ও দাদির খবর পাওয়া যাচ্ছে না। তারা বেঁচে আছেন না মরে গেছেন তা এখনো জানা যায়নি।

শিশুটির চাচা মানিক জানান, শিশু নাইমাকে নিয়ে সিলেট থেকে তার মা কাকলী ও দাদী উদয়ন এক্সপ্রেসে করে চাঁদপুরে ফিরছিলেন। পথে দুর্ঘটনার শিকার হয় তাদের ট্রেন।

মানিক জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। এছাড়া নাইমার বাবা মাইনুদ্দিনও দুর্ঘটনার খবর পেয়ে চাঁদপুর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রওয়ানা দিয়েছেন। কিন্তু তারা কেউই নাইমার মায়ের মোবাইলে যোগাযোগ করতে পারছেন না। তারা বেঁচে আছেন না মারা গেছেন তা বলতে পারেননি তিনি।

ঢাকাটাইমস/১২নভেম্বর/এমআর