মুন্সীগঞ্জে ভূমি-খেকোদের গ্রাসে সরকারি জমির মাটি

প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০১৯, ১০:০৭

আরাফাত রায়হান সাকিব, মুন্সীগঞ্জ

মুন্সীগঞ্জে ইছামতি নদীসংলগ্ন টঙ্গীবাড়ী উপজেলার বেতকা ও সিরাজদিখান উপজেলার নগরফুরসাইল চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার সরকারি জমির মাটি অবৈধভাবে কেটে বিক্রি করছে ভূমি-খেকোরা। প্রতিদিন ভোররাত থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত নদীতে ট্রলার রেখে লাখ লাখ টাকা মূল্যে মাটি কেটে বিক্রি হচ্ছে ইটভাটায়। দীর্ঘদিন যাবত চলছে অবৈধ এসব কার্যক্রম। এতে সরকারি আবাদযোগ্য জমিতে কোনো কোনো স্থানে ৮-১০ ফুট  গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মাটি কাটার সময় শত শত শ্রমিকের কাছে থাকে দেশীয় অস্ত্র। তাদের বেপরোয়া আচরণে এলাকাবাসী কেউ  প্রতিবাদ করতেও সাহস পায় না।

গত শুক্র ও শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীতে ট্রলার রেখে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার বেতকা চরাঞ্চলের রায়পুড়া মৌজার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের মাটি কেটে নিচ্ছে ভূমি-খেকো চক্রটি। এসব মাটি জমা করা হচ্ছে ট্রলারে। ট্রলারভর্তি করে বিভিন্ন এলাকার ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে এসব মাটি।

মাটি কে নিচ্ছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কয়েকজন শ্রমিক বলেন, আমরা দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাই। মাটি কেটে টাকা পাই। সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর গ্রামের আলমাছ হলইয়ের ছেলে আলাউদ্দিনের নির্দেশে মাটি কাটা হচ্ছে বলে জানান শ্রমিকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধু আলাউদ্দিনই নয় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে মাটি কাটছে কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র। টঙ্গীবাড়ী উপজেলার সুন্দরগঞ্জ গ্রামের গণি দেওয়ানের তিন ছেলে আইয়ূব আলী দেওয়ান, হাসেম দেওয়ান, অধম দেওয়ান, সেলিম খান, শামীম খান এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তারা সরকারি জমির মাটি কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ইটভাটায় বিক্রি করছেন।

শুক্রবার সকালে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে অধম দেওয়ানসহ কয়েকজন ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে যান। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, শামীম খান উপস্থিত থেকে জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছেন। তিনি শ্রমিকদের দেখিয়ে দিচ্ছেন কোথায় থেকে মাটি কাটবে। আর শ্রমিকরা মাটি কেটে ট্রলারে তুলছে।

এ ব্যাপারে শামীম খানের সাথে কথা হলে তিনি তার নিজ জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছেন বলে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন।

স্থানীয়রা জানান, এসবের বাইরে দোসরপাড়া এলাকার একটি মহল প্রতি রাতে ট্রলার নিয়ে এসে রাতের আঁধারে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন ১৫-২০টি ট্রলার ভরে মাটি কাটা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বেতকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলম শিকদার বাচ্চু ঢাকা টাইমসকে বলেন, মাটি বিক্রি চলছে শুনেছি। আমি খোঁজ নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসামৎ হাসিনা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৩নভেম্বর/জেবি)