আবরার হত্যা মামলায় চার্জশিট নির্ভুল হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০১৯, ১৮:৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় আদালতে দেওয়া চার্জশিট নির্ভুল হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সার্বিক আইন শৃঙ্খলা বিষয়ে সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি নির্ভুল চাজর্শিট দেওয়ার জন্য আমরা প্রচেষ্টা নেব। বিচারের বিষয়টি পুলিশের অধীনে নয়, বিচার আদালত করবেন। তবে খুব শিগগিরই এর বিচার হবে, আমরাও আশা করছি।’

বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়।

পরদিন আবরারের বাবা ১৯ শিক্ষার্থীকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ এজাহারের ১৬ জনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় বুধবার ২৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

অভিযোগপত্রের আসামিদের মধ্যে ১৯ জনের নাম এজাহারেই উল্লেখ ছিল। পুলিশ তদন্তে নেমে আরও ৬ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে।

অভিযোগপত্রের ২৫ আসামির মধ্যে চারজন পলাতক। তাদের মধ্যে জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোর্শেদ এজাহারভুক্ত আসামি। আর মুজতবা রাফির সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে তদন্তে।

আবরার হত্যা মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পলাতকদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। আমাদের কাছে তথ্য থাকলে তাদের ধরে ফেলতাম। তবে বাইরে বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ঘরের কোথাও আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে হয়তো আছে, আমরা ধরে ফেলব।’

এ সময় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যুদ্ধাপরাধী বা মানবতাবিরোধী অপরাধী ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে না বলে জানান মন্ত্রী।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু নিয়মনীতি রয়েছে। এরমধ্যে জাতীয় পতাকার নির্দিষ্ট মাপ ও অন্যান্য বিষয় রয়েছে। জাতীয় পতাকার নির্দিষ্ট মাপ ছাড়া কোনও পতাকা ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়া, মলিন, ছেঁড়া, রঙচটা পতাকা উত্তোলন করা যাবে না। শুধুমাত্র ১৬ ডিসেম্বর যেকেউ পতাকা উত্তোলন করতে পারবেন। পরদিন পতাকা নামিয়ে ফেলতে হবে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যুদ্ধাপরাধী বা মানবতাবিরোধী অপরাধী ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে না। এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

বিজয় দিবসে রাজধানীসহ সারাদেশে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পস্তবক অর্পণের জন্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য, কূটনীতিকদের বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্মৃতিসৌধে আনা-নেওয়া করা হবে। অপ্রীতিকর ঘটনা ও পরিস্থিতি এড়াতে সাভার থেকে স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকাটিও সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে।

দুর্নীতি বিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কোনো অভিযান থেমে নেই। অভিযান চলছে ও চলবে। তথ্যভিত্তিক অভিযান চালানোর জন্য আমরা নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছি। যেখানেই তথ্য পাচ্ছি, সেখানেই ধরা হচ্ছে।

সড়ক আইন বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে  আসাদুজ্জামান খান বলেন, সড়ক বিভাগের মন্ত্রী বলেছেন, কিছুদিন আইনটি সম্পর্কে সবাইকে জানানো হচ্ছে। সময়মতো তিনি আইনটি প্রয়োগে নির্দেশনা দেবেন।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সড়ক পরিবহনের আইন নিয়ে কাজ করতে কতটা প্রস্তুত জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ট্রাফিক পুলিশের যে দায়িত্বটি, তারা তা সম্পূর্ণভাবেই পালন করছে। তাদের মধ্যে আন্তরিকতার অভাব নেই, প্রচেষ্টায়ও দুর্বলতা দেখছি না। পৃথিবীর সব জায়গায়ই যানজট হয়, বাংলাদেশের যানজটের জন্য বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে যানজট সমস্যার সমাধান হবে আশা করি।

ঢাকাটাইমস/১৩নভেম্বর/এমআর