দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে কর দিতে হবে: অর্থমন্ত্রী
প্রকাশ | ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ২০:৫৪ | আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ২২:২৬
দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সবাইকে কর দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, সরকার দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে তথা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আয়কর আদায় করে। তাই পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজন অর্থের। করের মাধ্যেমে সেই অর্থ জোগাড় করা হয়। কর প্রদানের মাধ্যমে আমাদের ধর্মীয় দায়িত্বও পালিত হয়।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে জাতীয় আয়কর মেলা ২০১৯-এর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। এ সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান (এনবিআর) মো. মোশাররফ হোসেন ভুইয়া এবং সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
মেলা উদ্বোধনের পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে সাবেক অর্থ সচিব সিদ্দিকুর রহমান চৌধুরী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন। এরপর কর প্রদান করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর আমি আমার সম্পত্তি সন্তানদের নামে হস্তান্তর করে দিয়েছি। এ কারণে আমার সম্পদের পরিমাণ কমেছে। এবার আমার করযোগ্য আয়ের পরিমাণ ২ কোটি ৬৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে আয়কর দিয়েছি ৯১ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। আমার প্রকৃত সম্পদ ৬৮ কোটি ২২ লাখ টাকা।’
এ সময় স্ত্রী ও দুই মেয়ের করযোগ্য আয়, সম্পদের পরিমাণ ও কর পরিশোধের তথ্যও তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর করযোগ্য আয়ের পরিমাণ ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। তিনি কর দিয়েছেন ৭১ লাখ ২৯ হাজার টাকা। আমার স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ ৫০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আমার বড় মেয়ের করযোগ্য আয় ৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। তিনি কর দিয়েছেন ২ কোটি ৮২ লাখ টাকা। তার সম্পদের পরিমাণ ৪১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আর আমার ছোট মেয়ের করযোগ্য আয় ৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এতে সে কর দিয়েছে ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। তার সম্পদ ৬১ কোটি ৮২ লাখ টাকা।’
করদাতার সাথে কোনো কর কর্মকর্তা যদি অসদাচারণ করেন কিংবা অবৈধ প্রস্তাব দেন, সেটি তাকে অবহিত করার অনুরোধ করে অর্থমন্ত্রী করদাতাদের উদ্দেশ্য বলেন, ‘ভবিষ্যতে কর আহরণের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম আমরা সহ্য করব না। এ ধরনের অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
মেলার প্রথম দিনে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে আয়কর বিবরণী জমা দেন করদাতারা। এবার কর মেলা উপলক্ষে এনবিআর মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ও কর সংক্রান্ত তথ্য সম্বলিত ওয়েবসাইট চালু করেছে। ওয়েবসাইট থেকে আয়কর ফরম ডাউনলোড করে সেটি দাখিল করার সুযোগ আছে। মেলায় নতুন করদাতারা ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) নিতে পারবেন। আবার পুনঃ নিবন্ধন করে ই-টিআইএন নিতে পারবেন পুরনো করদাতারা।
এ ছাড়া মেলায় ই-পেমেন্টের জন্য পৃথক বুথ রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা, নারী,প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ করদাতাদের জন্য আছে আলাদা বুথ।
জানা গেছে, মেলার প্রথম দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে চলে। প্রথম দিন আয়কর সংগ্রহ
হয়েছে ৩২৩ কোটি ১৮ লাখ ৯৩ হাজার ৮৮৫ টাকা। মেলার পরিধি গতবছরের মেলার চেয়ে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতিদিন মেলা সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে। মেলায় আয়কর রিটার্ন দাখিল, ই-টিআইন গ্রহণ, ই-পেমেন্ট, ই-ফাইলিং, ই-পেমেন্টের ব্যবস্থা রয়েছে। মেলার বিশেষ আকষণ মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ করে করদাতাগণ রকেট, নগদ, বিকাশ ও প্রযোজ্য শিওর ক্যাশের মাধ্যমে আয়কর জমা দিতে পারছেন।
ঢাকাটাইমস/১৪নভেম্বর/ইএস