মেয়রের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের ফের শাসানোর অভিযোগ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৫ নভেম্বর ২০১৯, ২২:৫৯

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুল্লাহ আল মামুন আবার সাংবাদিকদের শাসিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার বিকালে বিভিন্ন প্রকল্পের প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য নিতে গেলে মেয়র তার নিজের কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসদাচরণ ও গালিগালাজ করে উল্টো মানহানি মামলার হুমকি দেন।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মেয়র আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) বিভিন্ন দপ্তরে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন খোদ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক টি আই এম মকবুল হোসেন প্রামানিক।

ওই অভিযোগে টি আই এম মকবুল হোসেন প্রামানিক উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে শপথ গ্রহণের পর থেকে পৌরসভার সচিবের সঙ্গে যোগসাজশ করে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও বিভিন্ন ভুয়া ভাউচার তৈরি করে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আত্মসাত করেন আব্দুল্লাহ আল মামুন।

আরও অভিযোগ, পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী ও উপসহকারী প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগসাজশ করে এডিপি, ল্যাব ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের প্রায় তিন কোটি টাকা আত্মসা করেছেন। গোপন টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ ভাগাভাগি করে কাজ না করে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন, যা এলাকাবাসীর জানা আছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন টি আই এম মকবুল হোসেন প্রামানিক।

মেয়র আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে পাকা রাস্তা কাঁচা দেখিয়ে টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ করে মকবুল হোসেন আরও বলেন, হাট-বাজার ইজারা ও পৌরকরের টাকা পৌরফান্ডে জমা না করে আত্মসাত করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মেয়রের অশোভন আচরণের বিষয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঢাকাটাইমস ও চ্যানেল এস টেলিভিশনের জাভেদ হোসেন, আনন্দ টিভির জেলা প্রতিনিধি মিলন খন্দকার ও দৈনিক স্বাধীন সংবাদের রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি রবিন সেনসহ কয়েকজন সাংবাদিক মেয়র আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো সরেজমিনে অনুসন্ধান করতে যান। পরে বিকাল পাঁচটার দিকে এসব অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য নিতে মেয়রের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সংযোগ কেটে দেন। কিছুক্ষণ পর পৌর মেয়র নিজে মিলন খন্দকারের মোবাইল ফোনে কল করে বক্তব্য দিতে রাজি হন।

পরে সুন্দরগঞ্জ পৌরসভায় মেয়রের কক্ষে সাংবাদিকরা প্রবেশ করার পর তাদের ক্যামেরা ও মোবাইল ফোনের ক্যামেরা বন্ধ করতে বলেন মেয়র আব্দুল্লাহ আল মামুন। সব ক্যামেরা বন্ধ নিশ্চিত হওয়ার পর মেয়র তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় এশিয়ান টিভির জেলা প্রতিনিধি খালেদ হোসেন সম্পর্কে গালিগালাজ করেন এবং উপস্থিত সাংবাদিকদের শাসিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মানহানি মামলার হুমকি দেন।

এর আগে গত সোমবার একই দুর্নীতির অভিযোগে মোবাইল ফোনে প্রেসক্লাব গাইবান্ধার সাধারণ সম্পাদক এশিয়ান টিভির জেলা প্রতিনিধি খালেদ হোসেন সুন্দরগঞ্জ পৌরমেয়র আব্দুল্লাহ আল মামুনের কাছে বক্তব্য চাইলে তিনি পরে কল দিতে বলে সংযোগ কেটে দেন। এর কিছুক্ষণ পর পৌর মেয়রের লোকজন সাংবাদিক খালেদ হোসেনকে মোবাইল ফোনে কল করে গালিগালাজ করেন ও হত্যার হুমকি দেন। এ ব্যাপারে ওই দিন রাতেই সাংবাদিক খালেদ হোসেন গাইবান্ধা সদর থানায় মেয়র ও কয়েকজনের নামে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এ-সংক্রান্ত একটি সংবাদ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় ক্ষিপ্ত হন মেয়র।

সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সাংবাদিকদের নামে মামলা ও হত্যার হুমকি, শাসানো এবং অসদাচরণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মাছুদ রানা, গাইবান্ধা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম রেজা, গাইবান্ধা সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নূরে হাবিব টিটন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও ঘাগোয়া ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর জামান রিংকু, ৭১ টিভির জেলা প্রতিনিধি সামিম আল সাম্য, এসএ টিভির জেলা প্রতিনিধি কায়সার প্লাবন, সাংবাদিক রওশন আলম পাপুল, শাহাদৎ হোসেন মিশুক, বাংলা নিউজের জেলা রিপোর্টার মোমেনুর রশিদ সাগরসহ আরও অনেকে।

(ঢাকাটাইমস/১৫নভেম্বর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :