ভয়াবহ সংক্রমণে বিপন্নের মুখে সুমেরুর সিল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ১৮ নভেম্বর ২০১৯, ১১:১৩

পৃথিবীর সর্ব উত্তরের বরফাচ্ছাদিত অঞ্চলে দলে দলে ঘুরে বেড়ায় সিল। আলাস্কার পানি ও বরফের মধ্যে তাদের নানারকম কসরৎ ও মাছ ধরার দৃশ্য মুগ্ধ হওয়ার মতো। তবে এই দৃশ্য হয়ত খুব বেশিদিন দেখা যাবে না বলে মনে করছেন গবেষকরা। বিশ্ব উষ্ণায়নের হাত ধরে প্রাণঘাতী সংক্রমণ উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের গণ্ডি পেরিয়ে পাড়ি জমিয়েছে সুদূর আলাস্কায়। আর তাতেই বিপন্নের পথে এসব সিল। ‘নেচার কমিউনিকেশনস’ জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্টে অশনি সঙ্কেত এমনই।

১৯৮৮ এবং ২০০২ সালে ফোসিন ডিসটেম্পার ভাইরাসের (পিডিভি) সংক্রমণে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল উত্তর আটলান্টিকের কয়েক হাজার সামুদ্রিক সিল। সেই একই সংক্রমণ যখন প্রশান্ত মহাসাগরীয় সিলদের দেহেও দেখা দিল, বিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ গভীর হয়েছিল। ভৌগোলিক অবস্থানগতভাবে সীমাবদ্ধ একটি রোগ কীভাবে উত্তর আটলান্টিক থেকে সুদূর উত্তর প্রশান্তে ছড়িয়ে পড়ল, ভেবে কূল পাচ্ছিলেন না তারা। পরে গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে দ্রুত গলছে সুমেরু মহাসাগরের বরফ আর তার হাত ধরেই এক মহাসাগর থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে অন্য মহাসাগরের সামুদ্রিক প্রাণীর দেহে।

পিডিভি সংক্রমণ প্রথমেই ঘায়েল করে সামুদ্রিক প্রাণীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে। তার জেরে নিউমোনিয়া। সংক্রমণ গুরুতর হলে ১০ দিনের মধ্যেই মারা যায় প্রাণীটি। ১৯৮৮ সালে প্রথম এটি মহামারী আকারে ছড়ায় উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের গ্রে সিলদের মধ্যে। প্রাণ যায় প্রায় ২৩ হাজার সিলের। দ্বিতীয় মহামারী ২০০২ সালে, সেবারও সংক্রমণ প্রাণ কেড়েছিল ৩০ হাজার সিলের। প্রশান্ত মহাসাগরীয় সিলদের মধ্যেও এই সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব দেখে সমীক্ষা শুরু করেন বিজ্ঞানীরা। ২০০১ থেকে ২০১৬ অবধি আলাস্কার সিল, সি লায়ন এবং সামুদ্রিক ভোঁদড়ের থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হতে থাকে, আর সেই সমীক্ষার রিপোর্টই সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার কমিউনিকেশনস’ জার্নালে।

রিপোর্টের প্রধান লেখক তথা ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ ট্র্যাসে গোল্ডস্টাইনের কথায়, ‘সমুদ্রে সিল, সি লায়নদের সাধারণ বিচরণক্ষেত্র থেকে কোনোভাবে সংক্রমণ ছড়িয়েছে কি না, সেটা দেখাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু বিভিন্ন প্রজাতির উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে একই ধরনের জীবাণুর অস্তিত্ব মিলল। সমুদ্র যত বেশি উন্মুক্ত, সংক্রমণের হার তত বেশি।’

গবেষণা বলছে, উষ্ণায়নের জেরে উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর থেকে এই সংক্রমণ আরও বৃহত্তর ক্ষেত্রে ছড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে নর্দার্ন এলিফ্যান্ট সিল, হাওয়াইয়ান মঙ্ক সিলের মতো সামুদ্রিক প্রাণীদের বিপন্ন হওয়ার সমূহ আশঙ্কা। এই সংক্রমণের প্রভাব কী হতে চলেছে, তা নিয়ে গবেষকরাও ধোঁয়াশায়। গবেষকদের একাংশ মনে করেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রশান্ত মহাসাগরের সামুদ্রিক প্রাণীগুলির মধ্যে এই সংক্রমণের স্বাভাবিক প্রতিরোধ তৈরি হবে। অন্য পক্ষের আশঙ্কা, এর জেরে প্রশান্ত মহাসাগরের এই প্রাণী বিপন্ন হয়ে পড়বে।

ঢাকা টাইমস/১৮নভেম্বর/একে

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে বিস্ফোরক আতঙ্ক, সন্দেহভাজন আটক

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম পর্বের ভোটগ্রহণ শেষ 

ইরানে হামলায় অংশ নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র: ব্লিঙ্কেন

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এখনই প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা নেই: ইরানি কর্মকর্তা

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনায় বিশ্ববাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম

ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়ার প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো

ইরানে হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্কবার্তা দিয়েছিলো ইসরায়েল: মার্কিন কর্মকর্তা

পাকিস্তানের জাপানি নাগরিকদের গাড়ি লক্ষ্য করে আত্মঘাতি বোমা হামলা, হতাহত ৫

ইরানে প্রধান বিমানবন্দরে পুনরায় ফ্লাইট চালু

৩টি ইসরায়েলি ড্রোন ধ্বংস করল ইরান

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :