সড়কে ভোগান্তির চাপ রেলে

প্রকাশ | ২১ নভেম্বর ২০১৯, ২০:৫৬ | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৯, ২১:০৯

কাজী রফিক, ঢাকাটাইমস

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাসে করে বাড়ি ফিরতে বৃহস্পতিবার ভোরবেলা ঢাকার কল্যাণপুর যান আসলাম উদ্দিন। কাউন্টার থেকে বেসরকারি এই চাকরিজীবীকে বলা হয় বাস নেই। অগত্যা তিনি কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে কোনোভাবে দুটো টিকিট জোগাড় করেন। যাত্রী চারজন হওয়ায় ঝামেলা এড়াতে আরও দুটি স্ট্যান্ড টিকিট কেটে নেন।

বৃহস্পতিবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আসলামের মতো এমন অনেক যাত্রীই ঢাকার কমলাপুর আর বিমানবন্দর স্টেশনে ভিড় করেন নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে। সড়কে পরিবহন সংকটে ভোগান্তি এড়াতে রেলে করে গন্তব্যে যেতে স্টেশনে ছুটে এসেছেন বলে তাদের অনেকেরই ভাষ্য।

সড়কে পরিবহন শ্রমিকদের কোনো ধর্মঘট না থাকলেও সদ্য কার্যকর হওয়া সড়ক আইনের কয়েকটি ধারায় আপত্তি জানিয়ে আসছেন তারা। এ অবস্থায় গত তিন দিন ধরে বেশ কয়েকটি জেলায় পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখে তারা। এতে করে দেশের বিভিন্ন রুটে যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। এ অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে পণ্যবাহী যানের মালিক-শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

চালক ও শ্রমিকদের অঘোষিত এই ধর্মঘটের টানা তিন দিন পর বাস চলাচল অনেকটা স্বাভাবিক হলেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকেও কিছু কিছু জেলায় বাস চলাচল বন্ধ ছিল বলে আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।

এদিকে স্বাভাবিকের তুলনায় গত দুই দিন ধরে রেলে যাত্রীচাপ বৃদ্ধির কথা স্বীকার করেছেন রেল কর্মকর্তারাও। অতিরিক্ত যাত্রীদের অধিকাংশেরই স্ট্যান্ড টিকিট নিয়ে দাঁড়িয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। চাহিদার প্রেক্ষিতে কয়েকটি ট্রেনে অতিরিক্ত বগিও লাগানো হয়েছে। হঠাৎ করে এমন যাত্রী বৃদ্ধিকে ঈদের সময়ের চাপের সঙ্গেও তুলনা করছেন রেলের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার এমনিতেই ভিড় বাড়ে ট্রেনে। তবে গতকাল ভিড় ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। আর আগের দিন বুধবারের ভিড় ছিল ঈদের সময়ের মতো। একারণে কোনো কোনো ট্রেনে অতিরিক্ত বগিও লাগাতে হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘রেলের যাত্রীরা অনেকেই আগে থেকে টিকিট কেটে রেখেছিলেন। আর এই অতিরিক্ত যাত্রীদের অধিকাংশই স্ট্যান্ড টিকিট নিয়ে যেতে হয়েছে। ছাদে যাত্রী একেবারেই নিষিদ্ধ। তাই আমরা ওই বিষয়টাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।’

ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর বৃহস্পতিবার বিভিন্ন জেলায় দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি খবর পাওয়া গেছে। অভ্যন্তরীণ রুটেও বাস চলাচল ছিল কম। ফলে রাজধানীর বাইরের অনেক জেলা থেকেই ঢাকামুখী বাস চলাচল তুলনামূলক কম বলে আমাদের প্রতিনিধরা জানিয়েছেন। এ অবস্থায় ট্রেনে চাপ বেড়েছে যাত্রীদের।

(ঢাকাটাইমস/২১নভেম্বর/ডিএম)