জরাজীর্ণ স্কুলভবনে দোতলা, ধসে পড়ার শঙ্কা

প্রকাশ | ২২ নভেম্বর ২০১৯, ১২:৩০

মাসুদ আলম, কুমিল্লা

আস্তর খসে পড়ছে, ছাদ ও পিলারের ঢালাই খসে রড দেখা যাচ্ছে। পিলারসহ ভবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশেও সৃষ্টি হয়েছে ফাটল সৃষ্টি। রয়েছে মেঝেতে গর্ত। সারা দেহে ক্ষত নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা জরাজীর্ণ এই ভবনটি কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ভাতেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের। স্কুল ভবনটি ১৯৯৫ সালে নির্মিত হয়। তখন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ভবনটি সঠিকভাবে নির্মিত হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। যার কারণে নির্মাণের ১৫/১৬ বছর পরই আস্তর খসে পড়তে শুরু করে ভবনের। আস্তে আস্তে ছাদ ও পিলারের ঢালাই সরে গিয়ে রড দেখা দেয় এবং বিভিন্ন অংশে ফাটল সৃষ্টি হয়।

জরাজীর্ণ এই স্কুল ভবনটি সংস্কার না করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর উন্নয়নের নামে ভবনটির উপরে দোতলা নির্মাণের কাজ করছে। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং ধসে পড়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। জরাজীর্ণ স্কুল ভবনের উপর ঝুঁকি নিয়ে দোতলা ভবন নির্মাণ ঘিরে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ করছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি পুরাতন স্কুল ভবনটিকে সংস্কার করা হোক এবং টেন্ডার হওয়া ৬৯ লক্ষ টাকা দিয়ে নতুন ভূমিতে নতুন ভবনটি নির্মাণে দাবি তাদের।

স্থানীয় বাসিন্দা সুমন, বিজয়, ফারুক, বাসার মোল্লাসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, বরুড়ার ভাতেশ^র গ্রামের একমাত্র বিদ্যাপীঠ ভাতেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় পুরাতন ভবনটির নিচতলা অত্যন্ত জরাজীর্ণ এবং অন্যদিকে ঝুঁকিপূর্ণও। স্কুল ভবনের প্রতিটি পিলারে ফাটল। আস্তর ও ঢালাই খসে পসে রড দেখা দিয়েছে। আবার সেই ভবনটির উপরে দোতল করার প্রস্ততি চলছে। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা।

ভাতেশ^র সমাজ কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সোবহান ঢাকা টাইমসকে বলেন, স্কুলের একমাত্র ভবনটি নির্মাণের ২২/২৩ বছর পরই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। গ্রামের একটি টিনের ঘরও ৩৫/৪০ বছর ব্যবহার করা যায়। পুরাতন সেই ভবনটি সংস্কার না করে জরাজীর্ণ ওই ভবনের উপরে কর্তৃপক্ষ দোতলা ভবন নির্মাণ করছে। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা চাই পুরাতন ভবনটিকে সংস্কার করে অন্য স্থানে নতুন ভবনটি নির্মাণ করা হোক। 

ভাতেশ^র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমি দায়িত্ব পেয়েছি মাত্র দেড় মাস হয়েছে। শুনেছি পুরাতন স্কুল ভবনের উপরে ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে দোতলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে নিচতলায় একটি এবং দোতলায় চারটিসহ মোট পাঁচটি রুম নির্মাণ করা হবে।

স্কুলের সভাপতি মো. তফাজ্জল হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমি স্কুল কমিটির সভাপতি। আমার কাজ হচ্ছে স্কুলের ভালো-মন্দ এবং সমস্যাগুলো দেখার। দোতলা নির্মাণের কাজ করছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। ভবনের নিচতলা পুরাতন হওয়ায় একটু আস্তর খসে পড়েছে। তবে জরাজীর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ কিছুই নয়। প্রকৌশলীদের থেকে এলাকাবাসী বেশি বোঝে না।’ 

কুমিল্লা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলী ইমাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ১৯৯৫ সালে ভাতেশ^র উচ্চ বিদ্যালয়ে ছয় তলা ফাউন্ডেশন নিয়ে স্কুল ভবন নির্মাণ করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ওই ভবনের উপর দোতলা নির্মাণ করা হচ্ছে। জরাজীর্ণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে এলাকার কিছু মানুষ এই ভবন নির্মাণে বাধা দিচ্ছে।

প্রকৌশলী বলেন, ‘শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর স্কুলের পুরাতন ভবনের সাথে নিচতলায় একটি রুম বাড়িয়ে দোতলা চারটিসহ মোট পাঁচটি রুম নির্মাণ করছে। এছাড়া রং উঠে যাওয়া, পিলার এবং ভবনের বিভিন্ন অংশে ঢালাই ও আস্তর খসে পড়া জায়গাগুলোসহ নিচতলাটি সংস্কার করা হবে।’

(ঢাকাটাইমস/২২নভেম্বর/জেবি)