বাঁচতে চান আইনজীবী মারজিয়া

বিশেষ প্রতিনিধি, ফরিদপুর
 | প্রকাশিত : ২৭ নভেম্বর ২০১৯, ১৭:৪৯

খুব দ্রুতই তার সময় যেন শেষ হয়ে আসছে। এই মুহূর্তে তার নষ্ট দুটি কিডনির অপরেশন না করা হলে শেষ হয়ে যেতে পারে তার জীবন প্রদীপ। আসুন না সকলে কিছুটা হাত বাড়িয়ে শশীর পাশে দাঁড়াই। এরই মধ্যে চিকিৎসক জানিয়ে দিয়েছেন, দু-এক মাসের মধ্যে তার কিডনি টান্সপারেন্ট করার জন্য। আর এই পরির্বতনের জন্য লাগবে ৩০ লাখ টাকার বিশাল অংক, যা এই পরিবারের জন্য পর্বতসম ব্যাপার।

ফরিদপুরের আইনজীবী গোলাম রব্বানী বাবু মৃধা ও মাতা আফরোজা রব্বানীর তিন কন্যার ভেতর মারজিয়া রব্বানী শশী দ্বিতীয়। ছোট বেলা থেকে শশী চোখে দেখেন না। এরপর আবার তার দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। প্রতি সপ্তাহে তাকে দুইবার কখনো কখনো তিনবার হাসপাতালে গিয়ে ডাইলোসিস নিয়ে জীবন চালাতে হচ্ছে। এর ভেতর সে পড়াশুনা করে ঢাকার সাইথইস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলবি (অর্নাস) পাস করেন। পড়াশোনায় তার মা ও ছোট বোন তাবিদা রব্বানী প্রচুর সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। মা বই পড়তেন আর এই পড়া শুনে সে মুখস্থ করতেন। অন্যদিকে তার ছোট বোন পরীক্ষার হলে তার রাইটার হিসেবে কাজ করতেন। প্রচণ্ড মেধা শক্তির শশী যা একবার শোনেন তা দিব্যি একইভাবে বলেন এ কথা জানান তার শিক্ষক ও বাবা-মা।

শশী এখন ফরিদপুর জজ কোর্টে বাবার সাথে চালিয়ে যাচ্ছেন আইন পেশা। এদিকে মেয়ের পেছনে প্রতিমাসে এতো টাকা ব্যয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে বাবা-মাকে। কিছুুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শশীর কথা শুনে তার বাবাকে দুই লাখ টাকা দেন। সে টাকাও খরচ হয়ে গেছে অনেক আগেই। এখন মেয়ের একটি কিডনি জোগার করার জন্য বিভিন্ন চেষ্টা চালিয়ে একজনের সাথে তার কিডনি ম্যাচিং করাতে পেরেছেন।

আগামী মাসের মধ্যে তার আপরেশন করা প্রয়োজন। এরই মধ্যে তার পা ও শরীর ফুলে গেছে। মেয়েকে বাঁচাতে হলে একটি কিডনি যে তার শরীরে প্রতিস্থাপন করার কথা বারবার তার বাবা-মা বলছেন বিভিন্ন জনের কাছে। এ ব্যাপারে সাহায্য প্রার্থনা করেছেন বিভিন্ন স্থানে গিয়ে।

তার বাবা গোলাম রব্বানী বাবু মৃধা বলেন, শশী আমাদের গর্বের সন্তান, তবে তার শারীরিক কারণে এখন প্রচুর সমস্যা হচ্ছে। একটি কিডনি জোগার করতে পেরেছি। কিন্তু সেটার জন্য যে পরিমাণ টাকার প্রয়োজন সেটাতো কোনভাবেই মিলাতে পারছি না। এখন আমার পাশে যদি কোন সহৃদয় ব্যক্তি পেতাম, তাহলে হয়তো তাকে স্বাভাবিক একটি জীবন উপহার দিতে পারতাম।

তিনি বলেন, ২০১৩ সালে আমার মেয়ের কথা শুনে প্রধানমন্ত্রী দুই লাখ টাকা দেয়। আমরা পুরো পরিবার তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ।

তার মাতা আফরোজা রব্বানী বলেন, আমার মেয়েটি এতো মেধাবী যা বলার নয়। ও একবার যা শোনে তাই বলতে পারে। আমরা ওকে কোন কিছুতে অপূর্র্ণ রাখিনি। কিন্তু হলে কি হবে ওর এতো কষ্ঠ যা বলার নয়। মাসে ৯/১০ ডাইলোসিস নিতে হয়। তারপর আবার কোর্টে প্যাকটিস করে। কতো আশা ওর সেই আশার কি হবে কে জানে।

ফরিদপুর জজকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও শশীর সহকর্মী এমএ ছামাদ বলেন, আমাদের কোর্টের খুব মেধাবী মেয়ে শশী। আমরা তার মতো একজন ভালো সহকর্মী পেয়ে আমরা গর্বিত। তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি। তবে ওর অসুখের কারণে অনেক সমস্যা হচ্ছে ওর জীবনে। আমরা সকলে চাই ও ভালো হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুক।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও শশীর চিকিৎসক স্বপন কুমার মন্ডল বলেন, এখন শশীর সামনে একটাই পথ আছে সেটা একটি কিডনি ওর দেহে প্রতিস্থাপন। এছাড়া আর কোন পথ নেই। তবে ডায়লোসিস দিয়ে রাখা যাবে তবে সেটা তো একটা সময় পর্যন্ত গিয়ে সবার থামতেই হবে। এখন তার শরীরে একটি কিডনি টান্সপারেন্ট করা বড্ড বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।

এদিকে সহকর্মী ও পরিবারের আশা, শশী আরো অনেকদিন তাদের মাঝে বেঁচে থাকবে। চোখ ও কিডনি ভালো হবে চালিয়ে যাবে তার আইন পেশা।

কোন সহৃদয় ব্যক্তি যদি শশীকে সহযোগিতা করতে চান, তবে তার পাশে হাত বাড়াতে পারেন। অ্যাকাউন্ট নাম- জাহাঙ্গীর আলম, ব্রাক ব্যাংক, ফরিদপুর শাখা, অ্যাকাউন্ট নম্বর- ১৭০১১০৪৩৮০৮৪৩০০১। এছাড়া বিকাশ নম্বর হলো- ০১৯২৯০৪১৪৮০।

(ঢাকাটাইমস/২৭নভেম্বর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :