নিখোঁজ আতিক উল্লাহকে গ্রেপ্তার দেখালো র‌্যাব

প্রকাশ | ৩০ নভেম্বর ২০১৯, ১৯:১১ | আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯, ১৯:১৩

নরসিংদী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

প্রায় দুই মাস ধরে নিখোঁজ থাকা মাদ্রাসা শিক্ষক ও লেখক হাফেজ মাওলানা আতিক উল্লাহর সন্ধান মিলেছে। তাকে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির আধ্যাত্মিক নেতা দাবি করে নরসিংদীর মাধবদী থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে বই, লিফলেট ও ল্যাপটপের হার্ডডিস্ক উদ্ধার করে সংস্থাটি। র‌্যাবের দাবি, তিনি উগ্রবাদ ছড়াচ্ছিলেন।

রাজধানী শ্যামলীর আদাবরের মাদ্রাসাতুল কুরআনিল কারীমের প্রধান শিক্ষক হাফেজ মাওলা আতীক উল্লাহ গত ৪ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পরদিন তার পরিবারের পক্ষ থেকে আদাবর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। গত ১৪ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে তার সন্ধান চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পরিবারের সদস্যরা। সেখানে তারা দাবি করেন, আতিক উল্লাহ বিভিন্ন গবেষণা নিয়ে কাজ করছেন। তার লেখা ৩০টিরও বেশি বই আছে। যার অধিকাংশই ইসলামি সাহিত্য ও কোরআন-সুন্নাহ সম্বলিত।

তবে শনিবার ভোরে মাধবদীর ছোট গদইচর এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে আতিক উল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে দাবি করেন র‌্যাব-১১ এর মিডিয়া অফিসার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন।

র‌্যাব কর্মকর্তার দাবি, আতিক উল্লাহ জেএমবির একজন ফতোয়া নির্ধারক ও দাওয়াতি শাখার সমন্বয়কারী। তিনি ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হারকাতুল জিহাদ (হুজি) এর দেশব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় হুজি নেতা আব্দুর রহমান ও সম্প্রতি ঢাকায় গ্রেপ্তারকৃত আফগান ফেরত মুজাহিদ আতিকুল্লাহর কাছে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর ২০১৪ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত এক জেএমবি নেতার মাধ্যমে জেএমবিতে যোগদান করেন।

আলেপ উদ্দিন বলেন, ‘আতিকুল্লাহ মূলত ফেসবুক, টুইটার ও টেলিগ্রাম আইডির মাধ্যমে তার সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। তিনি ঢাকার একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতার পাশাপাশি জেএমবির কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতেন। তিনি বর্তমান সরকারকে তাগুত সরকার আখ্যা দিয়ে দেশে খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য জেএমবির সদস্যসংখ্যা বাড়াতে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। তিন বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উগ্রবাদী সংগঠনের কার্যক্রমকে সমর্থনের পাশাপাশি দেশে জেএমবি’র বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডকে ইসলামিকভাবে সঠিক প্রমাণ করার জন্য বিভিন্ন হাদিসের অপব্যাখ্যা ও ফতোয়া দিয়ে আসছিলেন। এর পাশাপাশি সরকারকে কর দেওয়া হারাম এবং এটা ব্যভিচারের চেয়েও গোনাহের কাজ বলে একটি ফতোয়া দেন।’

র‌্যাব কর্মকর্তার দাবি, গত ২৭ নভেম্বর বুধবার ফেনী থেকে গ্রেপ্তারকৃত মো. সাইফুল্লাহ, মো. মাহাদী ওরফে মেহেদী হাসান ওরফে দাউদ, আজিজুল হক ও ইদ্রিস তার মাধ্যমে জেএমবিতে যোগদান করেন। আতিকুল্লাহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় সফরের মাধ্যমে জেএমবির কর্মীসংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করে আসছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় জেএমবির কার্যক্রমকে বাড়ানোর জন্য ফেনীর কয়েকটি জায়গায় গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে নাশকতামূলক কার্যক্রম করার পরিকল্পনা করেছিলেন।’

র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, আতিক উল্লাহ র‌্যাব-১১ এর দায়ের করা ফতুল্লা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী (জঙ্গি) মামলার পলাতক আসামি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামি জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি র‌্যাবের।

(ঢাকাটাইমস/৩০নভেম্বর/জেবি)