জঙ্গির মাথায় আইএস টুপি কে দিল প্রশ্ন হাইকোর্টের
হলি আর্টিজান হামলা মামলার রায়ের দিন নিম্ন আদালতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেও দণ্ডিত দুই আসামির মাথায় আইএসের চিহ্ন সম্বলিত টুপি কীভাবে এল তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
রবিবার আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) এক মামলার শুনানিতে জঙ্গির মাথায় আইএস টুপির বিষয়ে পত্রিকার প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে এ বিষয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
গত বৃহস্পতিবার আলোচিত হলি আর্টিজান মামলার রায়ের দিন দণ্ডিত দুই আসামি রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যানের মাথায় দেখা যায় একটি কালো টুপি, সেখানে আইএস এর পতাকার ঢঙে আরবি লেখা। পরে আসামিদের কারাগারে নেওয়ার সময় প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধীর মাথাতেও দেখা যায় একই রকমের টুপি।
ওই ঘটনা তদন্তে পুলিশ ও কারা অধিদপ্তর পৃথক দুই তদন্ত কমিটি গঠন করে। পুলিশের তিন সদস্যের কমিটি শনিবার তদন্ত প্রতিবেদন কারা মহাপরিদর্শকের দপ্তরে জমা দেন। ওই কমিটির প্রধান ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, কারাগার প্রাঙ্গণে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তারা দেখেছেন। জঙ্গি রাকিবুল আদালতের হাজতখানা থেকে মাথায় টুপি পরে বের হন। সেই টুপিই পরে এজলাস থেকে বের হওয়ার সময় তিনি উল্টিয়ে পরেন বলে তারা নিশ্চিত হয়েছেন।
অন্যদিকে কারা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল আবরার হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, তাদের প্রতিবেদনে ওই টুপি কারাগার থেকে আসেনি বলে বলা হয়েছে।
পত্রিকায় এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কথা টেনে আইনজীবী জেড আই খান পান্না আদালতকে বলেন, ‘পত্রপত্রিকায় আইএসের টুপি নিয়ে লেখালেখি হয়েছে। আমি আইএস ইস্যুতে কথা বলেছি। এখন আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত।’ তখন হাইকোর্ট বলেন, ‘মানবাধিকার কর্মীদের বুকে সাহস নিয়ে থাকতে হবে।’
তখন ওই আইনজীবী আদালতকে বলেন, ‘আইএসের টুপি নিয়ে পত্রিকায় দেখলাম- পুলিশ বলছে তারা এ বিষয়ে জানে না। অন্যদিকে কারা কর্তৃপক্ষ বলছে টুপি কারাগার থেকে যায়নি! তাহলে টুপি দিল কে? আইএসের টুপি ফেরেশতা দিল নাকি শয়তান দিল?’ তখন আদালত বলেন, ‘সর্ষের ভেতরে ভূত।’
পরে আদালত আইনজীবী জেড আই খান পান্নার নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে (ডিএজি) মৌখিক নির্দেশনা দেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজান বেকারিতে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা সারাদেশ নাড়িয়ে দিয়েছিল। বিচার শুরু হওয়ার এক বছরের মাথায় গত বুধবার আলোচিত ওই মামলার রায়ে সাত আসামি প্রাণদণ্ড দিয়েছে আদালত। আর একজনকে খালাস দেয়া হয়।
(ঢাকাটাইমস/০১ডিসেম্বর/ডিএম)