দেশের বাইরেও কাজ করতে চাই

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:৫৬

অনলাইন ডেস্ক

ছোটপর্দার অন্যতম জনপ্রিয় মুখ ইরফান সাজ্জাদ। যার অভিষেক হয়েছিল ‘ইমামী ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসাম-চ্যানেল আই হ্যান্ডসাম দ্য আলটিমেটম্যান’ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। এতে তিনি প্রথম হন। এরপর টিভি নাটকে পদচারণা। চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। ইরফান সাজ্জাদের অভিনয়জীবনের শুরু থেকে এই সময়ের ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন ঢাকা টাইমসকে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সায়রা সামসিয়া।

অভিনয়ের হাতেখড়ি হয়েছিল কীভাবে?
অভিনয়ে হাতেখড়ি স্কুলে পড়াকালীন। ‘লোহিত’ থিয়েটারে মঞ্চনাটকের মাধ্যমেই আমার অভিনয়জীবনের হাতেখড়ি। ২০০- ৩০০ অডিয়েন্সের সামনে পারফর্ম করা এবং তাদের ইনস্ট্যান্ট রেসপন্স পাওয়ার অভিজ্ঞতাটা অন্যরকম। তখন থেকেই আসলে অনুপ্রাণিত হই যে, কখনো যদি সুযোগ আসে তাহলে অভিনয়কে পেশা হিসেবে গ্রহণ করব।

হঠাৎ মুকাভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মালো কেন?
থিয়েটারটা কন্টিনিউ করা হয়নি এসএসসির পর। মুকাভিনয় আমি শুরু করি কলেজ লাইফে। অভিনয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত যেকোনো বিষয় আমাকে খুব টানে। আর কিছু না বলেও অনেক বড় ম্যাসেজ দেওয়া যায় মুকাভিনয়ের মাধ্যমে। তাই এটার প্রতি আগ্রহ জন্মায়।

ইরফান সাজ্জাদের ভাষায় অভিনয়ের সংজ্ঞা কী?
নিজের বিভিন্ন সত্তাকে ঠিকঠাকভাবে প্রেজেন্ট করতে পারাটাই আমার কাছে অভিনয়। অভিনয় আসলে করার কিছু না, অভিনয়টা অনুভব করার বিষয়। যে ক্যারেক্টার প্লে করতে হয় সেই ক্যারেক্টারটাকে ভেতর থেকে ফিল করতে হয়।

‘ইমামী ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসামÑ চ্যানেল আই হ্যান্ডসাম দ্য আলটিমেটম্যান’ এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেই আপনার উত্থান। আপনি কি মনে করেন এই ধরনের প্ল্যাটফর্মগুলো অভিনেতা-অভিনেত্রী তৈরির ক্ষেত্রে উপযুক্ত মাধ্যম?
হ্যাঁ, বিশেষ করে নতুনদের জন্য এই ধরনের প্ল্যাটফর্মগুলো একটা প্রাথমিক ধাপ। এই ধাপটা একজন অভিনেতা-অভিনেত্রীকে শুরুর দিকে অনেক বুস্ট আপ করে। যেটা তাদের ক্যারিয়ার শুরুতে অনেক হেল্প করে। 

এই প্রতিযোগিতার রেজিস্ট্রেশনে আপনি একটি যুগল ছবি ক্রপ করে দিয়েছিলেন। এর পেছনে কোনো গল্প আছে কি?
আমি একটা সময় কর্পোরেট লাইফে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। মিডিয়ায় আসার স্বপ্নটা আমার কাছ থেকে অনেক দূরে সরে যায়। এই প্রতিযোগিতার রেজিস্ট্রেশনের সময়ও আমি নিশ্চিত ছিলাম না। কারণ মিডিয়া আমার জন্য একটা স্পর্শকাতর জায়গা। এটা নিয়ে ফাজলামো করতে চাই না। ফ্যামিলির ফোর্সেই এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা। তখন মিনিমাম একটা ভালো ছবি ছিল না আমার। তাই পুরোনো একটা ছবি আমার স্ত্রীর সঙ্গে, সেটা কেটে দেই। জমা দেওয়ার পর প্রথম কয়েকদিন কল আসছিল না, একটু হতাশ হয়ে পড়ি। তারপর অডিশনের আগের দিন কল আসে। অফিস ফাঁকি দিয়ে অডিশন দিতে যাই। সিলেক্টেড হই। তারপরের গল্প তো আপনাদের সবারই জানা। 

২০০৮ সুপার হিরো-সুপার হিরোইন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন
সুপার হিরো-সুপার হিরোইন প্রতিযোগিতায় আমি টপ টেনে ছিলাম। তারপর ইলিমিনেটেড হই। তারপর আবার ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রিতে ব্যাক করি।

মিডিয়াতে আসার আগে কী করতেন?
ওই যে বললাম কর্পোরেট জব করতাম। আমি অনার্স সেকেন্ড ইয়ার থেকেই চাকরি করি। মিডিয়াতে আসার আগে আমি দীর্ঘদিন একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে দায়িত্বরত ছিলাম।

আপনি তিনটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তবে ছোটপর্দায় যে জনপ্রিয়তা ও সফলতা পেয়েছেন, বড়পর্দায় তেমনভাবে সাড়া পাননি। এর কারণ কি?

কারণ তখন আমি সিনেমার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলাম না। সত্যি কথা বলতে কি, আমি তখন সিনেমা করতে চাইনি। ইমপ্রেসের সঙ্গে যেহেতু আমি চুক্তিবদ্ধ ছিলাম সেই কমিটমেন্টের জায়গা থেকেই করা। এরপর কম করে হলেও আমি ১৫টি সিনেমার অফার পেয়েছি কিন্তু ফিরিয়ে দিয়েছি। আমার টার্গেট হচ্ছে আমি যখন সিনেমা করব, তখন শুধু সিনেমাই করব। আর ব্যাক করব না ছোটপর্দায়। আমি নাটক করে শিখছি। সিনেমায় কিছু শিখব না, পারফর্ম করব। ভালো সিনেমা দিয়েই বড়পর্দায় আবার ফিরতে চাই। ততদিন নিজেকে প্রস্তুত করছি।

নতুন বছরে কোনো পরিকল্পনা আছে কী?
নতুন বছরে অনেক ইচ্ছা আছে। আমি দেশের বাইরেও কাজ করতে চাই। বড় প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে চাই সেটা সিনেমা, নাটক কিংবা ওয়েব সিরিজ হোক। মোটকথা, ২০২০ সালে আমি এমন কিছু কাজ করতে চাই মিডিয়ায়, যেগুলো আমার জীবনে মাইলফলক হয়ে থাকবে।   

সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
ঢাকা টাইমস এবং আপনাকেও ধন্যবাদ

(ঢাকাটাইমস/২ডিসেম্বর/এজেড)