ব্র্যান্ড হিসেবে ‘সারা’কে বিশ্ববাজারে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:৫৬ | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৩:১৬

আসাদুজ্জামান

দেশের পোশাকশিল্পের নিজস্ব ব্র্যান্ড ‘সারা’ লাইফস্টাইল লিমিটেড। এটি রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পের সঙ্গে জড়িত স্নোটেক্স আউটওয়্যার লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। ‘সারা’ লাইফস্টাইল লিমিটেড ও  স্নোটেক্স আউটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম খালেদ। যিনি তৈরি পোশাকশিল্পে দুই যুগ ধরে কাজ করছেন। ব্র্যান্ড হিসেবে ‘সারা’র যাত্রা এবং এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন ঢাকা টাইমসের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আসাদুজ্জামান

সারার মূল প্রতিষ্ঠান স্নোটেক্সের যাত্রা শুরু কীভাবে?
শুরুটা প্রায় এখন থেকে বিশ বছর আগে। ছোট সাপ্লাইয়ের ব্যবসা। তারপর ছোট বায়িং হাউস। এরপর ছোট একটা ফ্যাক্টরি ১২-১৩ বছর আগে। পর্যায়ক্রমে আরো একটা ফ্যাক্টরি। গত ৫-৬ বছর আগে মোটামুটি একটা ফ্যাক্টরি ধামরাইয়ে। এখন আমরা প্রায় ১১ হাজার ফ্যামিলি মেম্বার। আগামী বছর শেষে এটা প্রায় ১৮ হাজার হবে।

গার্মেন্ট ব্যবসায় কেন আসলেন?
হঠাৎ করেই আসা। ২০ বছর আগে আমাদের সেক্টর বলতে এই একটাকেই বুঝাত। আর তো কিছুই ছিল না, তাই আমাদের আসতেই হয়েছে। সংসার চালানোর তাগিদে এসেছি। একদম শূন্য থেকে এসে আস্তে আস্তে আমরা এই পর্যায়ে।

আপনি গার্মেন্ট ব্যবসায় আছেন দীর্ঘদিন। সেখান থেকে ফ্যাশন হাউস সারা লাইফস্টাইলের শুরুটা কীভাবে হলো?

আমরা গার্মেন্ট সেক্টরে দেখতে দেখতে ২০ বছর কাটালাম। এখন আমরা মাঝেমধ্যে প্রতিযোগিতায় পড়ি। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো আমরা ডিফিকাল্ট সময়ের মধ্যে যাব। কারণ কোনো এক সময় আমেরিকাতে অনেক গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি ছিল। কানাডাতেও ছিল। এখন থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে কোরিয়াতেও ছিল। এগুলো এখন শিফট হয়ে চায়না থেকে বাংলাদেশে আসে। কোনো এক সময় হয়তো অন্য কোনো দেশে যাবে, কারণ আমাদের পার্সেজ পাওয়ার বাড়ছে সবার। এটা একটা সেনসেটিভ সেক্টর, যেখানে কম দাম পাওয়া যায় সেখানেই চলে যায়। আর ওই রকম থেকেই একটা ইকোনমি বড় হয়। ইকোনমিটা একটু বড় হলে যখন সবার সামর্থ্য হয় ইনভেস্টমেন্টটা তখন ডিফারেন্ট ক্যাটাগরিতে চলে যায়। আমাদেরটাও এক সময় যাবে। আমরা ২০ বছর ধরে যে সেক্টরটা শিখলাম, এটাকে আমরা কেন কন্টিনিউ করব না। শুধুমাত্র আমরা ব্র্যান্ডিংটা জানতাম না, সেটা যোগ করলাম। আমাদের এক্সপার্টদের আমরা কাজে লাগাব যাদের কারণে আমরা একটু বড় পর্যায়ে পৌঁছেছি। তাহলে আমরা সারাকেও একটা বড় পর্যায়ে নিতে পারব। সেই জন্যই আমরা ব্র্যান্ডিং করছি। 

ঢাকায় সারার কয়টি শোরুম রয়েছে?

স্নোটেক্সের লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড ‘সারা’র কাজ শুরু ২০১৮ সালের মে থেকে। ঢাকার মিরপুর ‘সারা’র প্রথম আউটলেট। এরপর চালু হয় বসুন্ধরা সিটিতে। তৃতীয় আউটলেটটি মোহাম্মদপুরে। চতুর্থটি সম্প্রতি উত্তরায় চালু হয়। এর পরেরটি শিগগিরই বারিধারায় উদ্বোধন হবে। 

আগামীতে শোরুমের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে কি না?
আমরা আগামী বছর আরো পাঁচটি শোরুম করব ঢাকাতে। এরপর পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় শহর, জেলা শহর এবং বিদেশেও আউটলেট করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সারাকে ব্র্যান্ড হিসেবে জনপ্রিয় করার প্রচেষ্টা সম্পর্কে বলুন।
আমরা আমাদের ডিজাইনিং টিম, অনলাইন টিম, সফটওয়্যার টিমগুলো ডেভেলপ করছি। এখনো আমরা ব্র্যান্ডটা শিখছি, এটাকে যখন আমরা অর্গনাইজ করব তখন বিভাগীয় শহরে যাব। যখন আমরা আরেকটু অর্গানাইজড হব তখন আমরা বাংলাদেশের বাইরে যাব। সুতরাং এখন আমরা কাছাকাছি থেকে নিজেদের স্ট্রং করার চেষ্টা করছি।

অফলাইনের দিকে জোর দেবেন নাকি অনলাইনের দিকে?
অনলাইনে আমাদের খুব স্ট্রং একটা টিম কাজ করছে। এগুলোকে ঠিক করতে আমরা কাজ করছি। আমরা অফলাইন এবং অনলাইন দুটোতেই প্রাধান্য দিয়েছি।

পোশাকে বৈচিত্র্য আনতে কোন ধরনের ডিজাইন নিয়ে আপনারা কাজ করছেন?

আমরা পুরো ফ্যামিলির ডিজাইন নিয়ে কাজ করছি। কত কম দামে একটা ভালো কোয়ালিটি দেওয়া যায় সেই চেষ্টা করছি।
মার্কেটের রিকোয়ারমেন্টের ওপর আমরা ডিজাইন করি। আমাদের খুব স্ট্রং একটা ডিজাইন টিম রয়েছে। দলে ১২ জন ফ্যাশন ডিজাইনার আছেন। মার্কেটের চাহিদা অনুযায়ী তারা ডিজাইন তৈরি করে যাচ্ছে। 

পোশাকের মান ধরে রাখতে কী করছেন?
গত ২০ বছরে আমরা এটাই শিখে আসছি। ইন্টারন্যাশনাল কাস্টমারদের আমরা কম দামে কোয়ালিটি জিনিস দেওয়ার চেষ্টা করছি। 

আগামীর পরিকল্পনা কী আপনাদের?
গত দেড় বছরে আমাদের পাঁচটা শো-রুম হয়েছে। আগামী বছর আরো পাঁচটা করব। তারপর ধীরে ধীরে আরো বড় করব সেটাই আমাদের পরিকল্পনা। ‘সারা’কে বিশ্ববাজারে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

ধন্যবাদ আপনাকে।

ঢাকা টাইমস এবং আপনাকেও ধন্যবাদ।

(ঢাকাটাইমস/২ডিসেম্বর/এজেড)