দুধ বিক্রেতার ছেলে বিশ্বকাপে অধিনায়ক

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৭:৫৯

আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের জন্য সোমবার দল ঘোষণা করেছে ভারত ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের আসরে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেবেন উত্তর প্রদেশের প্রিয়ম গর্গ। বিরাট কোহলি, উন্মুক্ত চাঁদ, পৃথ্বী শ-দের দলে নাম লেখানো প্রিয়মের উত্থান এত মসৃণ ছিল না। প্রিয়মের বাবা বাড়ি বাড়ি দুধ বিক্রি করে ছেলের খেলার খরচ যোগাতেন। নিজের অধ্যাবসায় আর বাবার কঠোর পরিশ্রমেই আজ স্বপ্নপূরণ হয়েছে প্রিয়মের।

প্রিয়ম বলেছেন, ‘মাত্র ১১ বছর বয়সে মাকে হারাই। কিছু বুঝে ওঠার আগেই জীবনে এক শূন্যতা ঘিরে ধরে আমাকে। বাবা আর দিদিদের সাহচর্যে বেড়ে উঠি। আমার বাবা আমার জন্য অনেক আত্মত্যাগ করেছেন।’

একটা সময় ছিল প্রিয়মের বাবা নরেশ গর্গ বাড়ি বাড়ি দুধ বিক্রি করে প্রতিদিন রাতে ১০ টাকার একটা করে নোট দিতেন প্রিয়মকে। পরের দিন সকালে মিরাটে প্র্যাকটিস করতে যাওয়ার খরচা হিসেবে। প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ বাসের ছাদে চেপে নিজের স্বপ্নকে ছুঁতে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে প্রিয়মকে।

সঞ্জয় রাস্তোগির অ্যাকাডেমিতে প্রিয়মকে অবশ্য নিয়ে যেতেন তাঁর বাবা। প্রিয়মের কথায়, ‘বেশিরভাগ কঠিন পরিশ্রমটা আমার বাবাই করেছেন। দুধ পৌঁছানো থেকে স্কুল ভ্যান চালানো, ভারী মালপত্র তোলা - সবকিছুই বাবা আমার জন্য করেছেন। যাতে আমার জীবনটা সুন্দর হয়। বাবা চাইতেন যে আমি যেন ভালো জায়গায় ট্রেনিংয়ের সুযোগ পাই। একজন ক্রিকেটার হিসেবেই আমাকে দেখতে চেয়েছিলেন বাবা।’

এর পরেই আস্তে আস্তে উত্তর প্রদেশের অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬, অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলা থেকে জাতীয় দলে সুযোগ। প্রিয়ম ইতিমধ্যেই প্রথম সারির ক্রিকেটে একটি ডবল সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন। উত্তর প্রদেশের হয়ে রঞ্জিতে খেলেছেন। আর এবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেবেন প্রিয়ম গর্গ।

প্রিয়মের বাবা নরেশ গর্গ বলেন, ‘আমাকে দুধের ব্যবসা বন্ধ করতে হয় প্রতিদিন সকালে ওকে মাঠে নিয়ে যেতে হত বলে। তখনই আমি স্কুল ভ্যান চালানো শুরু করি এবং খবরের কাগজ বিলি শুরু করি। প্রত্যেক দিন রাতে আমি প্রিয়মকে আমার সঙ্গে ভ্যানে তুলে নিতাম। রাতে গাড়িতেই খাবার খেয়ে কাগজ তুলতে যেতাম। এরপর শহরের বিভিন্ন জায়গায় খবরের কাগজের যোগান দিতাম। যাতে সকালে ওকে মাঠে নিয়ে যেতে পারি। আমি ওত পড়াশোনা শিখিনি। ক্রিকেট কি সেটা ওত বুঝতাম না। কিন্তু একদিন রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে আমার দেখা হয়। তিনি বলেন, চিন্তা করবেন না। আপনার ছেলে সুযোগ পাবে। আমি তখন খুব খুশি হয়েছিলাম।’

অনূর্ধ্ব-১৯ ভারত অধিনায়ক প্রিয়ম গর্গের এবার লক্ষ্য সিনিয়র দলে সুযোগ পাওয়া। কারণ সেটাই যে প্রিয়মের বাবার একমাত্র স্বপ্ন। বাবার স্বপ্নকে জিইয়ে রাখেন তিনি। আর সেই স্বপ্নেই লালিত হয় প্রিয়মের স্বপ্নও।

(ঢাকাটাইমস/৩ ডিসেম্বর/এসইউএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :