বড় বড় ভবন নয়, গবেষণায় মনোযোগী হোন: শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ২১:০০

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বড় বড় ভবন নির্মাণের প্রতি অনেক বেশি নজর থাকে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ভবন নির্মাণের ঝোঁক কমিয়ে গবেষণা বাড়ানোর প্রতি তাগিদ দিয়েছেন মন্ত্রী।

মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষাখাতে উচ্চতর গবেষণা সহায়তা কর্মসূচির চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এই সরকার বরাবরই গবেষণাবান্ধব। আমরা যখনই কোনো শিক্ষা বিষয়ক প্রকল্প নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কাছে যাই, ল্যাবের কথা, লাইব্রেরির কথা বিশেষভাবে জিজ্ঞেস করেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বড় বড় ভবন নির্মাণের প্রতি অনেক বেশি নজর থাকে। অবশ্যই অবকাঠামোর দরকার আছে। তবে অবকাঠামো যেমন দরকার তেমনি গবেষণাও দরকার।’

মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনী ইশতেহারে বলা ছিল জিডিপির ৪ ভাগ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ থাকবে। কারণ শিক্ষাই হচ্ছে সর্বোৎকৃষ্ট বিনিয়োগ। কিন্তু এত বছর পরেও সেটি হয়নি। এখন পর্যন্ত আমরা সব মিলিয়ে জিডিপির তিন ভাগের মতো আমরা শিক্ষাখাতে বরাদ্দ রেখেছি। কাজেই আমাদের অনেক দূর বাড়াতে হবে।’

শিক্ষাখাতে বরাদ্দ কম থাকার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন উন্নয়নের যে স্তরে আছি সেখানে বড় বড় মেগা প্রকল্পের দরকার রয়েছে। তাই হয়তো এই মুহূর্তে বিনিয়োগের প্রয়োজন। আর সেগুলো হয়ে যাওয়ার পরে আগামীতে যখন মেগা প্রকল্প কমে আসবে তখন শিক্ষায় অনেক বেশি বিনিয়োগ করতে পারব।’

দীপু মনি বলেন, ‘চতুর্থ বিপ্লবের জন্য অন্য অনেক কিছু করার পাশাপাশি অবশ্যই গবেষণার প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। গবেষকরা সে কাজটি করে যাচ্ছেন। তবে তাদের জন্য বরাদ্দ কখনো কখনো অপ্রতুল, তবুও সরকার গবেষকদের পাশে আছে। আগামীতে আরও শক্তপোক্তভাবে আপনাদের পাশে থাকবে এই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছি।’

শিক্ষাখাতে উচ্চতম গবেষণা সহায়তার কর্মসূচির আওতায় ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট ১৮ কোটি দুই লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকার চেক হস্তারন করা হয়। এর আগে ২০১৬ সালে শিক্ষাখাতে উচ্চতর গবেষণা সহায়তা কর্মসূচির নীতিমালা প্রনয়ণ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভিসি অধ্যাপক মেসবাউদ্দিন আহম্মেদকে সভাপতি ও ব্যানবেইসের মহাপরিচালককে সদস্য সচিব করে ১৩ সদস্যের কমিটি করা হয়। কমিটির একাধিক বৈঠক করে বিভিন্ন কর্মসূচি নির্ধারণ করে এর আওতায় সাতটি বিষয়কে অধিক্ষেত্র ধরে কাজ শুরু করে। এরমধ্যে ছিল গাণিতিক বিজ্ঞান, জীবন সম্পর্কিত বিজ্ঞান, ভৌত বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, আইসিটি, মেরিন সাইন্স এবং সপ্তম পঞ্চমবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা গবেষণা। এসব বিষয়ের ওপর গবেষকদের কাছে থেকে অনলাইনে আবেদন চাওয়া হয়। আবেদনগুলো রিভিউ ও রিটিং করে বিশেষজ্ঞ একটি দল। তাদের সুপারিশের আলোকের স্টিয়ারিং কমিটি অনুমোদন করে তাদের হাতে চেক তুলে দেয়া হয়।

কমিটির জানায়, ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে চলতি বছর পর্যন্ত মোট ১২১০টি আবেদন, ১৬০৭টি প্রস্তাব পাওয়া যায়। এরমধ্যে ৬২১টি প্রস্তাব গবেষণার জন্য সুপারিশ করা হয়। সেখান থেকে ৩০২টি প্রকল্প এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়েছে। এসব গবেষণা প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে গিয়ে মোট ৬৩ কোটি ৩২ লাখ ৬৫ হাজার ব্যয় হয়েছে। আরও ৩১৯টি প্রকল্প বাস্তবায়নধীন। চলতি অর্থ বছরে ৬২১টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ৬৭ কোটি ৮৫ লাখ ৮ হাজার ব্যয় হয়েছে। বাস্তবায়িত এসব কর্মসূচি তথ্য ও ফলাফলের সম্বলিত প্রকাশনার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাত সদস্যের একটি কমিটি কাজ করছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) আব্দুল্লাহ আল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন মাউশির সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইনসহ সংশ্লিষ্টরা।

(ঢাকাটাইমস/০৩ডিসেম্বর/টিএটি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :