‘দেখি না আগামীকাল কী হয়’?

প্রকাশ | ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৪:৩৫ | আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৪:৪৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের আদেশকে সামনে রেখে আশায় বুক বেঁধে আছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। জামিন না পেলে সরকার পতনের একতরফা আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছে দলটি। খালেদা জিয়ার ব্যাপারে আগামীকাল আদালতের নির্দেশ কী আসে তা জানার পরই বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান রিজভী। সংবাস সম্মেলনে রিজভীকে প্রশ্ন করা হয় জামিন না হলে বিএনপি কোন ধরনের কর্মসূচির দিকে যাবে।

জবাবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘দেখি না আগামীকাল কী হয়? আমরা কতদিন আর অপেক্ষা করবো? আইনি প্রক্রিয়া দেখে কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে রিজভী বলেন, ‘যখন গণতন্ত্রের জায়গা বন্ধ হয়ে যায় তখন রাজপথেই তার সমাধান করতে হয়।’

বৃহস্পতিবার জিয়ার চ্যারিটেবল মামলায় ৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বেগম খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির দিন ধার্য আছে।

রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের আস্থার প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ বিনা অপরাধে অবৈধ ক্ষমতার জোরে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আইন-আদালত, ন্যায়বিচার, সংবিধান, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার, বয়স, অসুস্থতাসহ সকল বিবেচনায় চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়া আইনগত অধিকার। দেশ-বিদেশের আইনজ্ঞরা বলছেন, এই মামলায় জামিন না পাওয়া বিস্ময়কর। তিনি নিশ্চিতভাবেই জামিনের হকদার। গোটা বাংলাদেশের মানুষ অব্যাহতভাবে দাবি জানাচ্ছে দেশনেত্রীর জামিনের। অথচ স্বাভাবিক এই জামিন নিয়ে কত রকমের টালবাহানা করা হচ্ছে! সরকারদলীয় লোকেরা প্রকাশ্যে হুমকি ও ঘোষণা দিয়ে জামিনে বাধা দিচ্ছে। দেশনেত্রীকে জেলে রেখে হত্যার হুমকি দিচ্ছে সরকার।’

বিএনপি নেতা বলেন, ‘আগামীকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ বেগম খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি করবেন। আগামীকালের মধ্যে তার শারীরিক অবস্থার সবশেষ মেডিকেল রিপোর্ট দিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ৭৫ বছর বয়সী দেশনেত্রীর স্বাস্থ্যের অবস্থা এতো ভয়ঙ্কর যে, এই মুহূর্তে তাকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা না হলে জীবনহানির চরম ঝুঁকিতে পড়বেন তিনি।

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকারের অশুভ ষড়যন্ত্রের আরেকটি জলজ্যান্ত প্রমাণ হলো গত ২৫ দিন ধরে তার সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাত করতে না দেয়া। এটি জেলকোডের চরম লঙ্ঘন। এটির মাধ্যমে বিধি-বিধানকে উপেক্ষা করে প্রতিহিংসার বিধানকেই চরিতার্থ করা হচ্ছে। গত ১৩ নভেম্বরের পর থেকে আর সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। আমরা বর্তমানে তার শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে চরম আশঙ্কায় দিনাতিপাত করছি।’

খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে আশা প্রকাশ করে রিজভী বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, সর্বোচ্চ আদালত থেকে তিনি ন্যায়বিচার পাবেন। বেগম খালেদা জিয়া দেশের সিনিয়র সিটিজেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দেশের জনপ্রিয় শীর্ষ রাজনীতিবিদ- তার জামিন পাওয়া ন্যায়সঙ্গত অধিকার। ইতোপূর্বে এধরনের মামলায় সর্বোচ্চ আদালত থেকে অনেকেই জামিন পেয়েছেন, সেটির অসংখ্য নজিরও রয়েছে। সারা জাতি আগামীকাল দেশনেত্রীর জামিনের বিষয়ে আদালতের দিকে তাকিয়ে আছে।’

(ঢাকাটাইমস/০৪ডিসেম্বর/বিইউ/এমআর)