নেপালের গাধিমাই উৎসবে হাজার হাজার মহিষ বলিদান
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘রক্তাক্ত’ উৎসব হিসেবে পরিচিত নেপালের গাধিমাই উৎসব। প্রায় আড়াইশ বছর ধরে এ উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে।
২০১৪ সালে ধর্মীয় পশু বলিদান প্রথা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল বিভিন্ন প্রাণী দাতব্য সংস্থাগুলো। কিন্তু মঙ্গলবার ভোর থেকে প্রায় ২০০ কসাই তাদের পশু বলিদান শুরু করার জন্য প্রস্তুতি নেন। ছাগল, ইঁদুর, মুরগি, শূকর আর কবুতর হত্যার মধ্য দিয়ে এ উৎসব আবার শুরু হয়েছে।
গাধিমাই উৎসব নামে পরিচিত নেপালের বারিয়ারপুরে গাধিমাই দেবীর মন্দিরে নতুন করে শুরু হওয়া পশু হত্যার প্রথম দিনে কয়েক হাজার মহিষ বলি দেওয়া হয়েছে।
আয়োজনের চেয়ারম্যান মতিলাল কুশোয়া জানান, উৎসবের মধ্যে রয়েছে বিনামূল্যের খাবার ও তাঁবু। এর পুরোটাই দান থেকে বহন করা হয়ে থাকে।
আয়োজক কমিটির সদস্য বীরেন্দ্রা প্রাসাদ যাদব বলেন, আমরা এটিকে সমর্থন না দেয়ার চেষ্টা করেছি কিন্তু মানুষজনের এই প্রথায় বিশ্বাস রয়েছে এবং এখানে উৎসর্গ করার জন্য তারা আসে।
প্রাণী বলিদান অত্যন্ত নিষ্ঠুর একটা রীতি বলে দীর্ঘদিন দাবি করছেন প্রাণী অধিকারকর্মীরা। ২০১৫ সালে হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল এবং অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার নেটওয়ার্ক নেপাল বিজয় ঘোষণা করেন, পশু বলিদান নেপালে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
কিন্তু বারিয়ারপুর গাধিমাই মন্দিরের চেয়ারম্যান রাম চন্দ্র শাহ সাংবাদিকদের জানান, পশু বলিদান নিষিদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ভক্তদের অনুরোধ করা যেতে পারে, যাতে তারা দেবীর উদ্দেশ্যে পশু বলি না দেন। কিন্তু সে জন্য তাদের বাধ্য করা যাবে না এবং এই রীতিও পুরোপুরি নিষিদ্ধ বা বন্ধ করা যাবে না।
হিউম্যান সোসাইটি ইন্ডিয়া বলছে, সংগঠনের পরিচালক আলোকপর্ণা সেনগুপ্তা মন্দিরের পুরোহিতকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছেন। তবে তার আবেদনটি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
দুদিনব্যাপী এই উৎসবটি শুরু হওয়ার আগে পশু আনা-নেয়া আটকে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। অনুমোদন ছাড়া সীমান্ত দিয়ে পশু পারাপার করার সময় সেগুলো জব্দ করতে শুরু করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
নেপালের সরকারও কোনোরকম সহায়তা করেনি বলে জানিয়েছেন উৎসবের চেয়ারম্যান মতিলাল কুশোয়া। তা সত্ত্বেও নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে বারিয়ারপুরের মন্দিরে পশু আনা হয়। (ঢাকাটাইমস/০৪ডিসেম্বর/আরআর)