যাবজ্জীবন সাজা হতে পারে এসকে সিনহার

প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৮:১৩

আমিনুল ইসলাম মল্লিক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণ হলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এসকে) সিনহার যাবজ্জীবন সাজা হতে পারে। দুদকের মামলায় দণ্ডবিধির ১০৯, ৪০৯ ও ৪২০ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযোগ আনা হয়েছে অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনে।

আলোচিত মামলাটির তদন্তে এস কে সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা জানিয়ে গতকাল অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয় কমিশন। এখন সেটি আদালতে জমা দেয়া হবে। এরপর অভিযোগ গঠন হলে শুরু হবে বিচারকাজ।

মামলায় ধারা ৪০৯-এ বলা আছে সরকারি কর্মচারী কর্তৃক অথবা ব্যাংকার, ব্যবসায়ী বা প্রতিনিধি কর্তৃক অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের অপরাধ।এ অপরাধটি প্রমান হলে যাবজ্জীবন সাজা অথবা দশ বছর মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম সাজা হতে পারে।

ধারা ৪২০-এ বলা আছে প্রতারণা ও সম্পত্তি অর্পণ করার জন্য অসাধুভাবে প্রবৃত্ত করা। এ ধারায় সর্বোচ্চ সাজার কথা বলা হয়েছে সাত বছরের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড।

আর ১০৯ ধারায় অপরাধে সহায়তা করা প্রমাণিত হলে অপরাধ সংঘটনকারীর অনুরুপ সাজা ভোগ করতে হবে।

চলতি বছরের ১০ জুলাই দুদকের জেলা সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-১ এ এই মামলাটি করা হয়। দণ্ডবিধি-১৮৬০ এর ৪০৯, ৪২০, ১০৯ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) এবং মানিল্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২), (৩) ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।

তৎক্ষালীন ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) ঋণ জালিয়াতি এবং চার কোটি টাকা আত্মসাতে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ছাড়াও আরও ১০জন এ মামলার আসামি। এদের মধ্যে ফারমার্স ব্যাংকেরই রয়েছেন ৬ জন।

সিনহার বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া কিভাবে শুরু হবে জানতে চাইলে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘অভিযোগপত্র এখন আদালতে যাবে। আদালত চার্জশীটের ওপর শুনানি করবে। আদালত সন্তুষ্ট হলে এটি আমলে নেবে। তারপর বিচারের কাজ শুরু হবে।’

যেসব ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে সেখানে সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীনের কথা উল্লেখ রয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী।

দেশের বাইরে থাকায় এস কে সিনহা আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারবেন কি না প্রশ্নে দুদকের এই আইনজীবী বলেন, ‘আদালত তার নিজস্ব বিধি অনুযায়ী চলবে। উনি দেশের বাইরে মানে পলাতক। পলাতক অবস্থায় আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারবেন না।’

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং কিছু পর্যবেক্ষণের কারণে তোপের মুখে ২০১৭ সালের অক্টোবরের শুরুতে ছুটিতে যান তখনকার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। পরে বিদেশ থেকেই তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন সাবেক এই প্রধান বিচারপতি।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালে ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ব্যবসায়ী পরিচয়ে দুই ব্যক্তির নেয়া ঋণের চার কোটি টাকা বিচারপতি সিনহার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢোকার অভিযোগ ওঠে। এরপর অভিযোগের তদন্তে নামে দুদক। প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ার পর তার এস কে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

(ঢাকাটাইমস/০৫ডিসেম্বর/এআইএম/ডিএম)