খালেদার বাড়িটি দখলমুক্ত না হলে উন্নয়নের চেহারাটা কেমন হতো?

সোহেল সানি
| আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:৪৮ | প্রকাশিত : ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:৩৬
সোহেল সানি

গণতন্ত্রের তন্ত্রমন্ত্রে নয়, উন্নয়নের তোড়জোড়েই সাধারণ মানুষের মাঝে শেখ হাসিনার প্রতি নাভিশ্বাস ওঠেনি। সাধারণ মানুষের দৃষ্টিনিবদ্ধ, গণতন্ত্রের চেহারার দিকে নয়, দেশের চেহারার দিকে। টানা দশ বছরের উন্নয়নে শেখ হাসিনাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে শাসনক্ষমতায়।

শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তার কল্যাণে আওয়ামী লীগ টিকে আছে এমন দাবি করা হলেও তা অত্যুক্তি হবে না। সরকারপ্রধান হিসেবে শেখ হাসিনাই স্বয়ং চলমান শুদ্ধি অভিযান দ্বারা আওয়ামী লীগসহ সবগুলো অঙ্গসংগঠনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছেন।

আওয়ামী লীগের শক্তির হাতিয়াররূপে পরিচিতি ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষকলীগের মতো সংগঠনগুলোর মাথা কেটে ফেলেছেন। কোনটির সম্মেলনের আগেই এবং কোনটির সম্মেলনের মাধ্যমে।

আওয়ামী লীগের গোটা নেতৃত্ব হাতের মুঠোয় থাকলেও একযোগে অগ্নিমূর্তিধারণ করে প্রতিটি সংগঠনকে সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের হাত থেকে বাঁচানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার কারণেই।

২০০৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতি সর্বসাধারণই আস্থা রেখেছিল, কিন্তু সেই আস্থার অবস্থানটি বর্তমান অটুট আছে, বোধকরি এমন দাবি দলটির অতি কট্টর কোনো কর্মী করবে বলে মনে হয় না।

বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগের মূল নেতৃত্বেও যে আমূল পরিবর্তন আনবেন, তার সবুজ সংকেত পাওয়া যাচ্ছে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্বের চেহারায়। সারাদেশেই আওয়ামী লীগের কাউন্সিল হচ্ছে। বদলে যাচ্ছে জেলা, মহানগর, উপজেলা, ওয়ার্ড ইউনিয়নের নেতৃত্ব।

সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে শুধু নয়, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে বিরাট পরিবর্তন আসবে। আর এ সবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তার কারণে।

এই জনপ্রিয়তার কারণ যদি হয় উন্নয়ন, তাহলে বলতেই হয় সরকার টানা ক্ষমতায় রয়েছে বলেই তা সম্ভব হয়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার নেপথ্যে শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ কোনটি যদি বলা হয়, তাহলে আমি বলবো, গণতন্ত্রের চেহারা যাইহোক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাত থেকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি অবমুক্ত করাই হলো সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ এবং বড় উন্নয়নও বলা যেতে পারে। কেননা এই দখলমুক্তির মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র নিরাপদ জীবনে ফিরে এসেছে।

সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্র মাঝেমধ্যে আহত হলেও অন্তত হত্যার শিকার হয়নি। শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়ার মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা হলে বলতে হয়, বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াত যখন বাস, দোকানপাটে পেট্রোলবোমা মারায় লিপ্ত তখন শেখ হাসিনা বিশ্বের সর্ববৃহৎ বার্ন হাসপাতালে প্রতিষ্ঠা করেন। খালেদা জিয়ার সরকারের আমলে দেশ যখন দুনীতিতে হ্যাট্রিক করে শেখ হাসিনার নাম তখন বিশ্বের সৎ প্রধানমন্ত্রীর তালিকার শীর্ষে উঠে আসে। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি জামায়াত যখন কল্পনায় মওলানাকে আকাশে দেখে, তখন শেখ হাসিনা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পাঠায়। খালেদা জিয়ার সরকার যখন বিদ্যুতের খাম্বা তৈরি করে তখন শেখ হাসিনা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেন।

বিএনপি জামায়াত সরকার যখন সারের দাবিতে বিদ্রোহ করা কৃষকের মিছিলে গুলি করে হত্যা করে, তখন শেখ হাসিনা সরকার বিনামূল্যে সার বিতরণ করে।

বিএনপি জামায়াত যখন বাংলা ভাই শায়খ রহমানের আবিষ্কার করে শেখ হাসিনা তখন দেশকে জঙ্গিমুক্ত করে। খালেদ জিয়া সন্ত্রাসীদের মদদ দেন, শেখ হাসিনা তখন সাকিব মাশরাফিদের খোঁজেন। খালেদা জিয়া যখন বলেন পদ্মা সেতু সম্ভব নয়, শেখ হাসিনা তখন দৃশ্যমান করেন।

বিএনপি যখন যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে এক হয়, শেখ হাসিনার সরকার তখন একেক করে ওদের ফাঁসি কার্যকর করে। বিএনপি ঐক্যফ্রন্ট যখন চিৎকার করে জনগণকে বলে মাগো তোমার একটি ভোটে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে, শেখ হাসিনা তখন বলেন, মাগো তোমার একটি ভোটে বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে।

প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র নয়, সাধারণ মানুষের কাছে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে আমূল বদলে যাওয়া দেশের চেহারাটা।

লেখক: সাংবাদিক

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :