নড়াইলে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

নড়াইল প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:৫৪
প্রতীকী ছবি

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পারবিষ্ণুপুর গ্রামে তামান্না খাতুন নামে ২০ বছর বয়সী এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর গৃহবধূর স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে গেছে।

শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

তামান্না খাতুনের বাবা কালিয়া খড়রিয়া গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক আকতার মোল্যা জানান, প্রায় তিন বছর আগে পারবিষ্ণুপুর গ্রামের রব্বেল শেখের ছেলে দিনমজুর শিপানের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় শিপানকে এক লাখ টাকা এবং লাখ টাকার আসবাবপত্র দেন। তবে মেয়ের জীবন সুখের হয়নি। বিয়ের পর থেকে স্বামী শিপানসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তামান্নাকে প্রায়ই মারধর ও নির্যাতন করত। স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তামান্না কয়েকবার বাবার বাড়িতে চলে যায়। এ নিয়ে পুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একবার সালিশ করেও কাজ হয়নি।

সর্বশেষ গত ১৬ নভেম্বর শিপানদের প্রতিবেশি লিটন ও আনোয়ার এসে তামান্নাকে বাবার বাড়ি (খড়রিয়া) থেকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যায়। তামান্নাকে আর নির্যাতন করবে না-এমন অঙ্গীকার করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এরপরও তাকে একমাসের কম সময়ের মধ্যে তিনবার নির্যাতন করা হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার সকালে মাছ কাটাকে কেন্দ্র করে তামান্নাকে তার শ্বাশুড়ি মারধর করে বলে, তোকে (তামান্না) মেরে গাঙ্গে (নদী) ভাসিয়ে দেবো।

আকতার মোল্যা আরও বলেন, ‘শুক্রবার বিকাল পাঁচটার দিকে আমার মেয়ে মোবাইল ফোনে মারধরের কথা আমাকে জানায়। এ সময় তামান্নার এক বছরের শিশু সন্তান তাসলিমাও আমার সঙ্গে আধো আধো কথা বলার চেষ্টা করে। এরপর রাত ১২টার দিকে শিপানের প্রতিবেশি আনোয়ার তার মোবাইল ফোনে আমার মেয়ে তামান্নার অসুস্থতার খবর জানিয়ে এক্ষুণি শ্বশুরবাড়ি যেতে বলেন। মেয়ের অসুস্থতার খবরে বিচলিত হলে এক পর্যায়ে তামান্না মারা গেছে বলে জানায় আনোয়ার। পরে সেখানে গিয়ে ঘরের মধ্যে লেপ দিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় তামান্নার লাশ দেখতে পাই।’

ঘটনার পর থেকে তামান্নার স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের সাত সদস্য সবাই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। তামান্নার মুখের বাম পাশে আঘাতের চিহ্ন আছে। তাকে বালিশ চাপা দেয়া হয়েছে বলেও মনে হচ্ছে।

পুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মনি বলেন, তামান্নাকে নির্যাতনের ঘটনায় সালিশ করেও তাদের দাম্পত্যজীবন সুখের হয়নি। অবশেষে মেয়েটিকে লাশ হতে হলো।

কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকালে গৃহবধূ তামান্নার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। এ ঘটনায় তামান্নার শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।

ঢাকাটাইমস/৭ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :