৫২তম সমাবর্তন ঘিরে উৎসবমুখর ঢাবি

প্রকাশ | ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:২০

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম সমাবর্তন আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে দুপুর ১২টায় এই সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরু হবে।

এবারের সমাবর্তনে অংশ নিতে ২০ হাজার ৭৯৬ জন স্নাতক ডিগ্রিধারী নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে ১০ হাজার ৬৭৩ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং বাকি ১০ হাজার ৪৪ জন অধিভূক্ত সাত কলেজের গ্রাজুয়েট।

৫২তম সমাবর্তনে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ছাড়াও ভেন্যু হিসেবে থাকছে ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজ। বেলা ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠান শুরু হলে ডিজিটাল প্রযুক্তি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজ ভেন্যু থেকে সরাসরি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের গ্রাজুয়েটরা।

সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সভাপতিত্ব করবেন। আর সমাবর্তনে বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের কসমিক রে রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও পদার্থে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক তাকাকি কাজিতা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে তাকে সম্মানসূচক ডক্টর অব সায়েন্স ডিগ্রি দেওয়া হবে। এর আগে শোভাযাত্রা নিয়ে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ। পরে রাষ্ট্রপতির ক্রেস্ট গ্রহণের পর গ্রাজুয়েটদের ডিগ্রি প্রদান করবেন স্ব স্ব অনুষদ বা ইনস্টিটিউটের ডিন ও পরিচালকরা।

এবারের সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি ৭৯ জন কৃতি শিক্ষক ও গবেষকসহ ৯৮ শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক প্রদান করবেন। এছাড়া সমাবর্তনে ৫৭ জনকে পিএইচডি, ছয়জনকে ডিবিএ এবং ১৪ জনকে এমফিল ডিগ্রি দেওয়া হবে।

সমাবর্তনকে ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। শিক্ষা জীবনের সমাপ্তির বর্ণাঢ্য এ আয়োজনে অংশ নিতে উন্মুখ প্রায় ২১ হাজার স্নাতক সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের অনেকে কালো গাউন পরে, ক্যাপ উঁচিয়ে ফটোসেশন, রিহার্সেল আর হৈ-হুল্লোড় করছেন। তাদের এমন চিত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যরকম উৎসবের আমেজ চলছে।

সমাবর্তন ঘিরে শনিবার বিকালে থেকে রাত অবধি গ্র্যাজুয়েটদের পদচারণায় মুখর ছিল ক্যাম্পাস। কার্জন হল, টিএসসি বা কলা ভবনে উল্লাস করে বন্ধুদের নিয়ে ছবি তুলেছেন তারা। প্রিয় ক্যাম্পাসের আঙিনায় ফ্রেমে বন্দি করেছেন নিজেদের।

সমাবর্তনে অংশ নিতে যাওয়া ঢাবির আরবি বিভাগের ছাত্র আজিজ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল স্বপ্নের ক্যাম্পাস। এখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কতশত স্মৃতি। পড়াশোনা শেষ করে এখন স্বীকৃতির পালা। এ এক পরম পাওয়া। এ অর্জনে আমার সঙ্গে উচ্ছ্বসিত পরিবারের সদস্যরাও।’

ঢাবির অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থী ইসরাত। তিনি অনুভূতির কথা জানিয়ে বলেন, চার বছরের পড়ালেখা, পরিশ্রম, হাসি-আনন্দের বহু স্মৃতি জড়িয়ে আছে এখানে। তারপর গাউন পরার এই বিরল সুযোগ; সত্যিই গর্বিত মনে হচ্ছে নিজেকে।

সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে বর্ণিল সাজে সেজেছে ঢাবি ক্যাম্পাস। ব্যানার, ফেস্টুন আর নানা রঙের বেলুনে রঙিন কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, ঐতিহাসিক কার্জন হল, টিএসসি, রাজু ভাস্কর্য, স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর, কলাভবন, বটতলা, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ চত্বর, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, সিনেট ভবন।

সমাবর্তনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান গতকাল শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে উপাচার্য বলেন, সমাবর্তনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। অনুষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা হয়েছে। এসময় তিনি সমাবর্তনের দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গ্র্যাজুয়েটদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের জন্য সর্বসাধারণের প্রতি আহবান জানান। একইসঙ্গে তিনি সমাবর্তন অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে  বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকল সদস্য, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, র্যা ব, অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং গণমাধ্যমকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সদয় সহযোগিতা কামনা করেন।

ঢাকাটাইমস/৮ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এমআর