রুম্পা হত্যায় প্রেমিক সৈকত রিমান্ডে
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের স্নাতকের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার কথিত প্রেমিক আব্দুর রহমান সৈকতের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
রবিবার ঢাকা মহানগর হাকিম মো. মামুনুর রশিদ শুনানি শেষে আসামির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে এই রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর ডিবির রমনা জোনাল টিমের ইন্সপেক্টর শাহ মো. আখতারুজ্জামান ইলিয়াস আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, নিহত রুম্পা স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি সিদ্বেশ্বরী ক্যম্পাসের ইংরেজি বিভাগের স্নাতকের ছাত্রী ছিলেন। আসামি সৈকতও একই ইউনিভার্সিটির বিবিএর ছাত্র ছিল। সেই সুবাদে তাদের মধ্যে পরিচয় ও পরবর্তী সময়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ইতিমধ্যে তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ঘটনার দিন গত ৪ ডিসেম্বর বিকাল ৪টার দিকে নিহতের সাথে আসামির স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসের বাইরে রাস্তায় দেখা হয়। তখন তিনি রুম্পাকে কোনো কারণ ছাড়াই সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলেন। তখন তাদের মধ্যে এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ ডিসেম্বর রাত ১০টার ৪৫ মিনিটের দিকে রুম্পাকে ওই আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা হত্যা করে লাশ ৬৪/৪ সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডস্থ বাসার সামনে ছাদ থেকে ফেলে দেয়।
রিমান্ড আবেদনের শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষে জিআরও এসআই মাহমুদুর রহমান ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ তদন্তকারী কর্মকর্তার রিমান্ড আবেদন সমর্থন করে বক্তব্য দেন।
অন্যদিকে আসামি পক্ষে মো. আব্দুল হামিদ ভুইয়া রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ঘটনাটি হত্যা না অত্মহত্যা বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়। আর এই আসামির বাবা গত সপ্তাহের মারা গেছেন। তার ১৫ দিন আগে তার এক চাচা মারা গেছেন। এই মানসিক অবস্থায় একজন ব্যক্তি কী করে হত্যা করতে পারে। আর রুম্পার যন্ত্রনায় আসামি আগেই ক্যাম্পাস ছেড়ে দিয়েছে। তাই রিমান্ডের কোনো যৌক্তিকতা নেই।
গত বুধবার রাতে ৬৪/৪ সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডস্থ বাসার সামনে অজ্ঞাতপরিচয় এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন রাতে স্বজনেরা রমনা থানায় লাশের ছবি দেখে শারমিন রুম্পার পরিচয় শনাক্ত করেন। শুক্রবার লাশ ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বিজয়নগরে গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
দুই ভাই বোনের মধ্যে রুম্পা বড়। তার বাবা রোকনউদ্দিন হবিগঞ্জের একটি পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক। রুম্পা শান্তিবাগে ভাড়া বাসায় মায়ের সঙ্গে থাকতেন। ওই বাসায় তার চাচার পরিবারের সদস্যরাও থাকতেন।
যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে পাশাপাশি তিনটি ভবনের একটি ১২ তলা (আয়েশা শপিং কমপ্লেক্স)। এর চারতলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক ( দোকান, বিভিন্ন অফিস) কার্যক্রম চলে। পঞ্চম তলা থেকে আবাসিক ফ্ল্যাট। আর বাকি দুটি আবাসিক ভবনের একটি তিনতলা, অন্যটি পাঁচতলা। এর মধ্যে পাঁচতলা ভবনের ছাদে টিনের কাঠোমো। তিনটি ভবনের কোনোটিতেই সিসি ক্যামেরা নেই। তাই কোন ভবনটিতে শারমিন ঢুকেছিলেন, তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।
(ঢাকাটাইমস/০৮ডিসেম্বর/আরজেড/জেবি)