শিশু সন্তানকে কেড়ে নিয়ে স্ত্রীকে তাড়িয়ে দিলেন স্বামী

প্রকাশ | ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৭:১৬

আজহারুল হক, ময়মনসিংহ

সন্তান জন্ম দেওয়ার প্রায় ১০ মাসের মাথায় স্ত্রী সুইটি বেগমকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন স্বামী নূরু মিয়া। শুধু তাড়িয়ে দিয়েই ক্ষান্ত দেননি তিনি। মা সুইটির কোল থেকে কেড়ে নেয়া হয় ১০ মাসের শিশু সন্তানকে। এই ঘটনাটি ঘটে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার উত্তর বানাইল গ্রামে।

রবিবার দুপুরে গৃহবধূ সুইটির বাবার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, শিশু সন্তানকে ফিরে পেতে সুইটি আহাজারি করছেন। বাড়ির অন্য এক নারীর কোলে শিশু সন্তান দেখে হঠাৎ নিজের সন্তানের জন্য আবেগপ্রবণ হয়ে আহাজারি করছিলেন তিনি।

সংবাদকর্মী পরিচয় দিয়ে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই নারী নিজেকে কিছুটা সংযত করে ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমার সন্তানরে উদ্ধার কইরা দেইন, না অইলে আমি বাঁচতাম না।’ এ কথা বলে তিনি ফের কাঁদতে শুরু করেন।

আপনার সন্তান আপনিই ফিরে পাবেন এমন আশ্বাস দিলে কিছুটা স্বাভাবিক হন সুইটি। এরপর তিনি জানান, প্রায় দুই বছর পূবে বানাইল গ্রামের মাহতাব উদ্দিনের ছেলে নূরু মিয়ার সাথে তার বিয়ে হয়। ১০ মাস আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নাফি নামে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন সুইটি।

এদিকে সুইটির স্বামী নূরু মিয়া প্রতারণা করে ছেলের জন্ম নিবন্ধনে তার প্রথম স্ত্রী নার্গিস আক্তারের নাম লেখান। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় স্ত্রী সুইটিকে ২২ দিন আগে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন স্বামী নূরু মিয়া। সে সময় তার প্রায় ১০ মাস বয়সী ছেলে শিশু রাফিকে জোর করে রেখে দেয়।

গৃহবধূ সুইটির বাবা দুলাল মিয়া অভিযোগ করেন, ২২ দিন আগে আমার মেয়েকে মারধর করে তার শিশুকে জোর করে রেখে দেয় নূরু ও তার পরিবারের লোকজন। অথচ এই ২২ দিনের মধ্যে আমার মেয়েকে তার সন্তানের মুখটা পর্যন্ত দেখতে দেয়া হয়নি।

তবে সুইটির স্বামী নূরু মিয়া তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।

স্থানীয় গাংগাইল ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ আশরাফুজ্জামান খোকন জানান, যখন মেয়েটির বিয়ে হয়েছিল তখন তা বাল্য বিয়ে ছিল- যে কারণে সে সময় বিয়ে রেজিস্ট্রি করাতে পারেনি। এখন বয়স হয়েছে। কিন্তু রেজিস্ট্রি করতে চাইলেও কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। রেজিস্ট্রি করতে চাইলে বর্তমান তারিখে করতে হবে। কিন্তু তাদের বিয়ে তো হয়েছে দুই বছর আগে। পাশাপাশি এখন ১০ মাসের একটি শিশু সন্তানও রয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান নূরু মিয়াকে ভাল মানুষ দাবি করে বলেন, এখন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার মূল কারণ হলো সম্পত্তি নিয়ে। তার ২য় স্ত্রী সুইটি চাচ্ছে নূরু তার সম্পত্তি সুইটির নামে লিখে দিক। শিগগির বিষয়টি নিয়ে আবার বসে একটি স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/৮ডিসেম্বর/এলএ)