একযুগ পর লাভের মুখ দেখল মধ্যপাড়া পাথর খনি

প্রকাশ | ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ২০:২২

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর
ফাইল ছবি

প্রায় এক যুগ পর লাভের মুখ দেখেছে দেশের একমাত্র ভূ-গর্ভস্থ পাথর খনি মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (এমজিএমসিএল)। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি ৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা মুনাফা করেছে।

দিনাজপুরের গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (এমজিএমসিএল) বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন শুরু করে ২০০৭ সালের ২৫ মে থেকে। প্রথম অবস্থায় খনি থেকে দৈনিক ১৫ থেকে ১৮০০ টন পাথর উত্তোলন হলেও পরে তা নেমে আসে মাত্র ৫০০ টনে।

উৎপাদন শুরুর ৬ বছরে খনিটি লোকসান দিয়েছে প্রায় শত কোটি টাকা। অব্যাহত লোকসানের মুখে খনির উৎপাদন বাড়াতে ২০১৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি খনির উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় বেলারুশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামানিয়া ট্রেস্ট কনসোটিয়াম জিটিসিকে। তারা ১৭১.৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ৬ বছরে ৯২ লাখ টনপাথর উত্তোলন করে দেয়ার চুক্তি বদ্ধ হয়।

২০১৪ সালে দায়িত্ব নেয়ার পর জিটিসি ৩ শিফটে পাথর উত্তোলন শুরু করে। ৬ মাসের মধ্যে দৈনিক উৎপাদন ৫০০ টন থেকে সাড়ে ৫ হাজার টনে উন্নীত করে। ২০১৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা পাথর উত্তোলন করে ১১ লাখ ৯২ হাজার টন। কিন্তু আধুনিক ইশুইপ মেন্টের অভাব দেখিয়ে ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে পুরোপুরি পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দেয় জিটিসি। জিটিসি দায়িত্ব নেয়ার পরও বিভিন্ন সময়ে ইকুইপ মেন্টের অভাব, খনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিরোধসহ বিভিন্ন কারণে পাথর উত্তোলন ব্যাহত হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটিকে কয়েক শ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয়।

গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরেও খনিটি লোকসান হয় তিন কোটি ৫১ লাখ টাকা। অব্যাহত লোকসানের পর অবশেষে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে খনিটি। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি ৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা মুনাফা করেছে। অব্যাহত লোকসানের ১২ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম লাভের মুখ দেখল।

গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (মাইনিং অপারেশন) আবু তালেব মোহাম্মদ ফারাজী ঢাকা টাইমসকে জানান, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে খনি থেকে ১০ লাখ ৬৭ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬৪ কোটি ১৪ লাখ টাকায় পাথর বিক্রি হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ইয়ার্ডে বর্তমানে ৬ লাখ মেট্রিক টন পাথর মজুদ রয়েছে। খনির নতুন স্টোপ নির্মাণ, নতুন যন্ত্রপাতি, বিদেশি মেশিনারিজ স্থাপন করে ৩ শিফটে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। ৭ শতাধিক খনি শ্রমিক পাথর উত্তোলনের জন্য কাজ করছেন। এখন গড়ে দৈনিক ৫ হাজার টন পাথর উত্তোলন হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামীতে পাথর উত্তোলন আরও বাড়বে বলেই তারা প্রত্যাশা করছেন।

(ঢাকাটাইমস/০৮ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/ডিএম)