বিশ্ববিদ্যালয়ে যেকোনো ঝামেলার তাৎক্ষণিক সমাধান দিতে হবে: রাষ্ট্রপতি

প্রকাশ | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৭:০৭ | আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৭:৫৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো ধরনের ঝামেলার সৃষ্টি হলে সেটার দায় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। তিনি যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম সমাবর্তনে আচার্য হিসেবে অংশ নিয়ে এ আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে জ্ঞান অর্জনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, লাশ হয়ে হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য নয়। কর্তৃপক্ষ সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নিলে এসব অপ্রত্যাশিত ঘটনা অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব।’

‘তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এর দায় একেবারে এড়াতে পারে না। আশা করব ভবিষ্যতে কর্তৃপক্ষ সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নেবে।’

গত ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে পিটিয়ে হত্যা করে ওই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী।

বুয়েটের এই হত্যাকাণ্ড ছাড়াও দেশের বেশ কয়েকটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা বিরাজ করছিল। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতও হয়। এতে করে বেশ খানিকটা সময় একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকে।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, ‘কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া অমানবিক ও অনভিপ্রেত ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ও শিক্ষার্থীদের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তোমাদের মা-বাবা অনেক আশা-আকাক্সক্ষা নিয়ে তোমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। এমন অনেক পরিবার আছেন যারা সর্বস্ব দিয়ে তাদের ছেলেমেয়েদের মানুষ করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠান।’

‘তোমাদের মূল দায়িত্ব হলো লেখাপড়া করা এবং দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলা। তোমরা এমন কোনো কাজ করবে না যাতে তোমাদের পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের সম্মান ক্ষুণ্ন্ন হয়।’

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও গবেষকদের হাতে সনদ তুলে দেন আচার্য আবদুল হামিদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বেলা ১২টায় উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্ততা দেন জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের কসমিক রে রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক তাকাকি কাজিতা। অনুষ্ঠানে তাকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব সায়েন্স’ ডিগ্রি দেওয়া হয়।

সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল্লাহ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সিনেট, সিন্ডিকেট, হল প্রভোস্টসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা এবং নিবন্ধিত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাবির ৫২তম সমাবর্তনে অংশ নিতে নিবন্ধিত হন ২০ হাজার ৭৯৬ জন স্নাতক ডিগ্রিধারী। তাদের মধ্যে ১০ হাজার ৬৭৩ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী। আর অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থী ১০ হাজার ৪৪ জন।

অধিভুক্ত কলেজগুলোর মধ্যে বদরুন্নেসা ও ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা ইডেন কলেজ ক্যাম্পাসে এবং অন্য পাঁচটি কলেজের অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে।

(ঢাকাটাইমস/০৯ডিসেম্বর/এনআই/মোআ)