রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা

হেগে সাফল্য পেতে মরিয়া মিয়ানমার

প্রকাশ | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:৪৭

ঢাকা টাইমস ডেস্ক

আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) আনা রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলার শুনানিতে মিয়ানমারের পক্ষে নিজেই দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে দি হেগে পৌঁছেছেন দেশটির নেত্রী অং সাং সু চি। মঙ্গলবার আইসিজেতে মামলাটির তিনদিনের শুনানি শুরু হচ্ছে। এই মামলায় সাফল্য পেতে আঁটঘাট বেঁধে নেমেছে মিয়ানমার।

ইসলামি ঐক্য সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে গাম্বিয়ার আনা এই মামলাটি রোহিঙ্গা হত্যা-নির্যাতন নিয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে প্রথম কোনো মামলা। পশ্চিম আফ্রিকার ছোটো দেশ গাম্বিয়ার করা ওই মামলার বিপক্ষে ব্যক্তিগতভাবে আদালতে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকে নিজ দেশে অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসছেন বিতর্কিত এই নোবেল জয়ী রাজনীতিক।

মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মিস সু চিকে সাহায্য করতে একদল ‘খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক’ আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে। যদিও কারা এই আইনজীবী কারা- তা খোলাসা করা হয়নি।

গত কদিন ধরেই মিয়ানমারে হাজার হাজার মানুষ দেশটির বিভিন্ন শহরে গণহত্যার মামলায় অং সাং সু চির পক্ষে সমাবেশ করছে। বিভিন্ন বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়েছে গতকালও মধ্যাঞ্চলীয় মনিওয়া শহরে এক সমাবেশে কমপক্ষে তিন হাজার লোক জড়ো হয়।

আন্তর্জাতিক আদালতে সু চির সাফল্যের জন্য দেশের বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দির ছাড়াও খ্রিষ্টান গির্জাতেও বিশেষ প্রার্থনা হচ্ছে। বিভিন্ন শহরে রাস্তার পাশে বড় বড় বিলবোর্ড টাঙ্গিয়ে মিস সূচির সাফল্য কামনা করা হচ্ছে।

পূর্বাঞ্চলীয় একটি শহরে বিশাল এক বিলবোর্ডে আন্তর্জাতিক আদালত ভবনের ছবির ওপর অং সাং সুচির ছবি ছাপিয়ে লেখা হয়েছে - ‘আমরা তোমার সাথে রয়েছি।’

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সু চির সমর্থনে পাঁচ দিনের জন্য দি হেগে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে মিয়ানমারের একটি ট্রাভেল এজেন্সি। দুই হাজার ডলারের এই প্যাকেজে অনেক সাড়া পেয়েছে এই কোম্পানি। যদিও এই টাকার অঙ্ক বার্মিজদের কাছে অনেক টাকা। এছাড়া ইউরোপের বিভিন্ন শহর থেকে অনেক প্রবাসী বার্মিজও দি হেগে হাজির হচ্ছেন বলে জানিয়েছে বিবিসির বার্মিজ বিভাগ।

ইরাওয়াদ্দী এক সম্পাদকীয়তে লিখেছে, ‘আইন নিয়ে তার কোনো বিশেষ অভিজ্ঞতা না স্বত্বেও সু চি নিজে আদালতে দাঁড়ানোর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার এই সিদ্ধান্ত সুপরিকল্পিত...তিনি জানেন ‘বামার’ (বার্মার সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগোষ্ঠী ) বৌদ্ধরা তার পাশে রয়েছে।’

দি ডিপ্লোম্যাট বলছে, মিস সু চির এই সিদ্ধান্তের পেছনে ক্ষমতাসীন দল এনএলডির জনসমর্থন বাড়ানোর উদ্দেশ্য থাকা অসম্ভব কিছু নয়। কারন আগামী বছর মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন...সংখ্যাগরিষ্ঠ বামার জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে তার এবং তার দলের জনপ্রিয়তা এখনও প্রচুর, কিন্তু অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে তিনি দ্রুত সমর্থন হারাচ্ছেন।’

কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী যেমন টাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি, আরাকান আর্মি এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক আ্যালায়ান্স আর্মি - গাম্বিয়ার আনা এই মামলার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা বলছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্যপ্রমাণ জোগাড়ে তারা সাহায্য করবে।

(ঢাকাটাইমস/০৯ডিসেম্বর/ডিএম)