চার জেলায় সড়কে নিহত ৭

প্রকাশ | ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৮:৩৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দেশের অন্তত চারটি জেলায় লরি-পিকআপের চাপা, মোটরসাইকেলের ধাক্কা ও ট্রেনে কাটা পড়ে সাতজনের প্রাণ গেছে। নিহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্যসহ ছাত্রদলের এক নেতাও রয়েছেন। গতকাল নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, নওগাঁ ও বাগেরহাট জেলায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনায় অনন্ত সাতজন আহত হয়েছেন।

নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, মঙ্গলবার দুপুরে জেলার সুবর্ণচর ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রদলের এক নেতাসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। নিহতরা হচ্ছেন, সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ও পশ্চিম চরবাটা গ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে মো রাছেল (৩০), হাতিয়া উপজেলার জোড়খালী গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে নোমান হোসেন (৩৬) ও বেগমগঞ্জ উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের সাহেবেরহাট এলাকার জাহাঙ্গীর কবিরের ছেলে মেহরাজ হোসেন (২০)। আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তবে এদের মধ্যে চারজনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ও অপর একজনকে ঢাকা স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে সোনাপুর-চেয়ারম্যানঘাট সড়কের সুবর্ণচর উপজেলার তালতলি এলাকার মুকবুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে সোনাপুর থেকে ছেড়ে আসা একটি যাত্রীবাহী সিএনজিকে সামনে থেকে চাপা দেয় কন্টেইনারবাহী একটি লরি। এতে সিএনজিটি দুুমড়েমুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলে ছাত্রদল নেতা রাছেল ও স’ মিল শ্রমিক নোমান নিহত ও অপর তিন যাত্রী আহত হন।

চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহেদ উদ্দিন জানান, ঘটনাস্থল থেকে লরি ও সিএনজিটি আটক করা হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অপরদিকে, বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন উর রশিদ জানান, দুপুর ১টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের পূর্ব গয়েছপুর এলাকায় মাটিবাহী একটি পিকআপভ্যানের ধাক্কায় তিন মোটরসাইকেল আরোহী আহত হন। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে মেহরাজ হোসেন নামে একজনের মৃত্যু হয়।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, জেলার কোটালীপাড়ায় দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ দুইজন নিহত ও অপর দুজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে উপজেলার দেবগ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর থানায় কর্মরত পুলিশ কনেস্টবল এমদাদুল হক (৩০) ও কোটালীপাড়া উপজেলার কাচিকাটা গ্রামের রঞ্জিত বিশ্বাস (২৮)।

কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লুৎফর রহমান জানান, ‘দেবগ্রাম এলাকায় দুইটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে কোটালীপাড়া উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক এমদাদুল হক ও রঞ্জিত বিশ্বাসকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুজনকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, নিহত পুলিশ সদস্য এমদাদুলের বাড়ি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলায়। তিনি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানায় কর্মরত ছিলেন। গতকাল তিনি মোটরসাইকেলে করে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। নিহত দুইজন মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন।’

নওগাঁর আত্রাইয়ে তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে ফেরদৌস আলম (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকাল ৯টার দিকে উপজেলার মোহাদিঘী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ফেরদৌস আলম উপজেলার মোহাদিঘী গ্রামের মৃত. মফিজ উদ্দিন খানের ছেলে।

আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেম উদ্দিন জানান, গতকাল সকালে ফেরদৌস ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তবে কিভাবে তিনি ট্রেনের নিচে পড়লেন তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা সম্ভব হয়নি।’

বাগেরহাটে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় অনিতা বাগদী (৬০) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। গত সোমবার দিবাগত রাতে সদর উপজেলার রাখালগাছি ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত অনিতা বাগদী বাগেরহাট সদর উপজেলার রাখালগাছি ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের রনজিত ঘোষের স্ত্রী। দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী আহত হয়েছেন। তাদের সদর হাসাপতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে পুলিশ আহতদের নাম পরিচয় জানতে পারেনি।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাতাব উদ্দীন বলেন, অনিতা বাগদী রসুলপুরে তার বাড়ির সামনের রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগতির মোটরসাইকেলটি তাকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনিসহ মোটরসাইকেলের দুই আরোহী গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক অনিতাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকাটাইমস/১০ডিসেম্বর/ইএস