লালমনিরহাটে সরকারি ধান কেনার তালিকায় অনিয়ম

প্রকাশ | ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৪২ | আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৫৫

এস. কে সাহেদ, লালমনিরহাট
ফাইল ছবি

লালমনিরহাটে সরকারিভাবে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার লটারির তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তালিকায় সুবিধাভোগী প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের নাম স্থান না হলেও স্থান পেয়েছে খাদ্য অফিসের কর্মচারী ও খাদ্য বিভাগের দালাল-ফরিয়াদের নাম।

জানা গেছে, সারাদেশের মতো লালমনিরহাট জেলায় সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সরকারিভাবে ধান কেনার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। প্রথমত কৃষকদের একটি তালিকা তৈরি করে কৃষি বিভাগ। ওই তালিকা থেকে লটারির মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের একটি তালিকা তৈরি করে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু সেই লটারির মাধ্যমে সুবিধাভোগীর তালিকা তৈরিতেও অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে।

গত ৩ ডিসেম্বর জেলা শহরের কালিবাড়ী সরকারি খাদ্য গুদামে আমন ধান সংগ্রহের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে লটারির মাধ্যমে কৃষকদের নামের তালিকা প্রস্তুতকরণ উদ্বোধন করা হয়। লটারি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আবু জাফর। এসময় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিনসহ অন্যান্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

পরবর্তী সময়ে লটারিতে নাম উঠেনি এমন কৃষক ও খাদ্য বিভাগের দালাল-ফরিয়াদের নাম তালিকায় তুলে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। জেলার অন্যান্য উপজেলার খাদ্য গুদামগুলোতেও আমন ধান সংগ্রহের জন্য কৃষকদের নামের তালিকার লটারিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

জেলার হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ হল রুমে লটারির মাধ্যমে দুই হাজার ২০৮ টন ধান কেনার বিপরীতে দুই হাজার ২০৯ জন কৃষকের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ওই তালিকায় দেখা যায়, লটারিতে নাম উঠেনি এমন কৃষকের নাম ওই সুবিধাভোগীদের তালিকায় তুলে দেয়া হয়েছে। এছাড়া সুবিধাভোগীর তালিকায় সুকৌশলে স্থান পেয়েছে খাদ্য অফিসের কর্মচারী ও খাদ্য বিভাগের দালালরা। ফলে এই তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরপরই নানা অভিযোগ উঠতে থাকে।

উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, এই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ড তিস্তা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে বালুচরে পরিণত হয়েছে। ওই ওয়ার্ডগুলোতে কোনো আমন ধানের চাষ হয়নি। অথচ তালিকায় দেখলাম ওই তিন ওয়ার্ডে দুই হাজার ৫০০ ভোটারের বিপরীতে ৮২ জন সুবিধাভোগীর নাম রয়েছে। এই ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে প্রচুর আমন ধান চাষাবাদ হয়েছে। কিন্তু ওই তিনটি ওয়ার্ডে সাড়ে সাত হাজার ভোটারের বিপরীতে মাত্র ৬১ জন সুবিধাভোগীর নাম তালিকায় রয়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন ঢাকা টাইমসকে বলেন, সরকারিভাবে ধান কেনার জন্য কৃষকদের তালিকা তৈরি করতে লটারি করা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ওই লটারির তালিকায় জালিয়াতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

জেলা প্রশাসক আবু জাফর ঢাকা টাইমসকে বলেন, সরকারিভাবে ধান কেনার জন্য উন্মুক্ত লটারির মাধ্যমে কৃষকদের তালিকা প্রস্তুত করতে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে।

ঢাকাটাইমস/১১ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এমআর