পিপলস লিজিংয়ের ৩০ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ | ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:০৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

পুঁজিবাজারে অবসায়নের পথে থাকা আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (পিএলএফসিএল)পরিচালক ও কর্মকর্তাসহ মোট ৩০ জনকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে উচ্চ আদালত। পাশাপাশি তাদের পাসপোর্ট জব্দ করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের ২১ জন পরিচালক ও ৯ কর্মকর্তাসহ মোট ৩০জনকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও তাদের পাসপোর্ট জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। এর মধ্যে রয়েছেন চেয়ারম্যান, ২জন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), ১৮ জন পরিচালক এবং ৯ জন কর্মকর্তা।

উচ্চ আদালতে বিচারপতি খুরশিদ আলমের একক বেঞ্চ গত ৩ ডিসেম্বর শুনানি শেষে ৫ ডিসেম্বর পিপলসের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালক ও কর্মকর্তাসহ ৩০ জনের দেশ ত্যাগের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ৩০ জনের মধ্যে ১১ জনের আগে থেকেই ব্যাংক হিসাব জব্দ ছিল। এখন ওই ১১ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দের পাশাপাশি তাদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা এবং পাসপোর্ট জব্দ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাকি ১৯ জনের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা এবং পাসপোর্ট জব্দ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পরিচালক ২১ জনের মধ্যে রয়েছেন- চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামিউল হুদা ও এমএ ইউসুফ খান। এছাড়াও পরিচালক সায়মা ইসলাম, অমিতাভ অধিকারী, নার্গিস আলামিন, হুমায়িরা আলামিন, আরেফিন শামসুল আলামিন, এম মোয়াজ্জেম হোসেন, মতিউর রহমান, ইউসুফ ইসমাইল, বিশ্বজিৎ কুমার রায়, খবিরউদ্দিন মিয়া ও এম শহিদুল হক।

ইন্ডিপেনডেন্ট পরিচালক হলেন- নিজামুল আহসান, আবদুল কাদের সিদ্দিকী, শিখর কুমার হালদার, এমডি ইকবাল সাঈদ, সুকুমার মৃধা। নমিনেটেড পরিচালক নোয়াং চুং মং ও নাইং আইং টিং।

৯ কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন- এক্সিকিউটিভ পরিচালক হেলাল উদ্দিন, হেড অব লাইবেরিটি হারুন আর রশিদ, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট সাদিক আহমেদ জামাল, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সোহেল শামস, সিনিয়র সেলস ম্যানেজার গোলাম মহিউদ্দিন পলাশ, সেলস এক্সিকিউটিভ ফিরোজ মাহমুদ ও তরিকুল ইসলাম, উপমহাব্যবস্থাপনা পরিচালক কবির মোস্তাক আহমেদ, মহাব্যবস্থাপক নৃপেন্দ্র চন্দ্র পন্ডিত।

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর পিপলস লিজিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পায়। ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।  নানা অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনায় চরম সংকটে থাকায় ২০১৪ সাল থেকে কোন লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি। ফলে প্রতিষ্ঠানটির  অবসায়নের  সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।গত  ৪ নভেম্বর পিপলস লিজিংয়ে ৬ হাজার আমানতকারীর ৭০০ কোটি টাকা ফেরতে পেতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সাথে দেখা করেন।তাঁরা ২০১৫ সালের পূর্ববর্তী পরিচালনা পর্ষদ এবং পরবর্তী পরিচালনা পর্ষদের সকল সদস্যদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান। পিপলস লিজিংয়ের বর্তমান আমানত ২ হাজার ৩৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা রয়েছে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের। বাকি ৭০০ কোটি টাকা ৬ হাজার ব্যক্তি শ্রেণির আমানত। প্রতিষ্ঠানটি ঋণ দিয়েছে ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭৪৮ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ। এটি মোট ঋণের ৬৬.১৪ শতাংশ। খেলাপি ঋণের বড় অংশই নিয়েছেন কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা।

(ঢাকাটাইমস/১১ডিসেম্বর/আরএ/ডিএম)