‘পঙ্গুত্বের পথে খালেদা, মানবিক কারণে জামিন চাই’

প্রকাশ | ১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:৫৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পঙ্গু হওয়ার পথে বলে আদালতকে জানিয়েছেন তার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে জামিন দরকার বলে মনে করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে খালেদার আপিল শুনানি শুরু হওয়ার পর আদালতকে এসব কথা বলেন জয়নুল।

এছাড়া খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদালতে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তাকে ভুয়া বলে আখ্যায়িত করেন জয়নুল।

জিয়া এতিমখানা ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় দণ্ড মাথায় নিয়ে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গত এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বিভিন্ন মামলায় জামিন হওয়ার পর জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটিতে জামিন হলেই খালেদার মুক্তির পথ খুলবে বলে আশা করছেন তার আইনজীবীরা।

গত ৫ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চে এই আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা প্রতিবেদন দিতে না পারায় এজলাসে তুমুল হট্টগোলের মধ্যে তাদের আরও ছয় দিন সময় দিয়ে ১২ ডিসেম্বর আদেশ দেওয়ার দিন ঠিক করে আদালত।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৮ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে শুনানি শুরু হয়। সকাল ১০টা ১০ মিনিট রেজিস্টার জেনারেল আলী আকবর বিএসএমএমইউয়ের প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন।

এরপর ১০টা ২০ মিনিট থেকে শুনানি শুরু হয়। এর আগে বিচারকরা মেডিকেলের রিপোর্টটি দেখেন।

সাত সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের দেয়া প্রতিবেদনে বিএনপি প্রধানের ব্লাড প্রেশার ও ডায়াবেটিস কন্ট্রোলে আছে বলে জানানো হয়।

খালেদা জিয়া রাজি হচ্ছেন না বলেই তাকে উন্নত চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে মত প্রকাশ করে মেডিকেল বোর্ড।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বোর্ডের দেওয়া প্রতিবেদনকে ভুয়া বলে আখ্যায়িত করেন জয়নুল আবেদীন।

শুনানিতে খালেদার এই আইনজীবী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে ভালো মানুষ গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আজ পঙ্গু হওয়ার পথে। তিনি হাত-পা নড়াতে পারছেন না। চিকিৎসা এতো উন্নত হচ্ছে যে দিন দিন তিনি পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন।

জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস প্রেসারসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন। প্রোপার ট্রিটমেন্ট হচ্ছে না। তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। আমরা হিউম্যানিটি গ্রাউন্ডে জামিন চাই।’

জয়নুল আবেদীন বলেন,  আদালতে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল থেকে খালেদা জিয়ার যে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে সেটিও পুরোনো। আমাদের কথা কেউ শুনলেন না, অ্যাটর্নি জেনারেলও না।

খালেদার আইনজীবী বলেন, ‘ম্যাডাম খালেদা জিয়াকে জামিন দিলে উনি কি পালাবেন? এক্ষেত্রে রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব আছে। অ্যাটর্নি জেনারেলও রাষ্ট্রের, তারও দায়িত্ব রয়েছে আমাদের  সহযোগিতা করার। আমাদের পক্ষে কথা বলা উচিত।  হসপিটাল তো সরকারি। তারাতো অপারগতার কথা বলবেন।’

এরপর ১১টা ৪ মিনিটে বিরতিতে যান বিচারপতিরা। ১১টা ৩৮ মিনিটে আবার মেডিকেল রিপোর্ট নিয়ে শুনানি করেন জয়নুল আবেদীন।

ঢাকাটাইমস/১২ডিসেম্বর/এআইএম/এমআর