ফরিদপুরে বেগুন চাষে কৃষকের হাসি
ফরিদপুরের সবজি ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত সদরপুর উপজেলা। ঋতু ভেদে প্রায় সব ধরনের সবজি উৎপন্ন হয় এ উপজেলায়। বিশেষ করে সদরপুরের শৈলডুবির কৃষকরা বেগুন চাষের প্রতি বেশি আগ্রহী। কারণ তাদের বেগুন যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন হাট-বাজারে। চাষিরা বেগুনের আশানুরূপ দামও পাচ্ছে। এ কারণে তাদের চোখে-মুখে বিরাজ করছে আনন্দের ঝিলিক।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই মৌসুমে ফরিদপুরের সদরপুরে বেগুনের আবাদ হয়েছে ৪৮৬ হেক্টর জমিতে। যা থেকে উৎপাদন হবে ১১ হাজার ১৭৮ মেট্রিকটন। আর এই বিপুল পরিমাণ বেগুন ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে ছড়িয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
মণ প্রতি চাষিরা পাইকারি বিক্রয় করছেন প্রকার ভেদে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায়। নানা ধরনের সবজিসহ বেগুন চাষ করে একদিকে যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা, অন্যদিকে দেশের সবজির চাহিদা পূরণেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সহায়তা করছেন।
জেলার সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের শৌলডুবী, মাঠ শৌলডুবী, আবুলের মোড়, বাঁধানোঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পরিবার-পরিজন নিয়ে বেগুর চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ গাছ থেকে বেগুন তুলছেন, কেউ তা পানিতে পরিষ্কার করে দলা করছেন। আবার কেউ মাপঝোক দিয়ে বস্তায় তুলছেন।
প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত এই চিত্র দেখা মেলে এলাকাজুড়ে। আর কাক ডাকা ভোর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যবসায়ীরা তাদের পছন্দের পন্য কিনতে দর কষাকশি করে নিচ্ছেন।
শৌলডুবী বেগুন চাষি হারিজ মোল্লা জানান, ‘বিঘা প্রতি যে খচর বেগুন চাষে তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি আয় হচ্ছে, আর এই অর্থ দিয়ে পরিবারের সকল খবর মেটান চাষিরা।’
শৌলডুবী বাজারে ঢাকা থেকে আসা ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান জানান, ‘ফরিদপুরের এই অঞ্চলের বেগুন ক্রেতাদের কাছে সুনাম রয়েছে। তাছাড়া এ বেগুন পোকা বা পচা থাকে কম, যে কারণেই দূরদুরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে বেগুনসহ সবজি কিনে নিয়ে অন্যত্র বিক্রয় করেন।’
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, ‘শৌলডুবীর বেগুন চাষিদের মৌসুমের সময়ে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকি। এছাড়াও আমাদের কৃষি কর্মকর্তারা বেগুন ক্ষেতগুলোতে বিশেষ নজর রাখেন। যেকোনো সমস্যায় দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হয়। তাই চাষিরা বেগুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।’
জেলার শৈলডুবির বেগুনের কদর রয়েছে দেশের বিভিন্ন বাজার ও হাটে। ব্যবসায়ীরা এখান থেকে বেগুন কিনে ঢাকার কাওরান বাজার, শ্যামবাজার, যাত্রাবাড়ি, দোহার বাজার, নারিশা বাজার, কার্তিকপুর, শ্রীনগর, মাদারীপুর, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকেন।
(ঢাকাটাইমস/১১ডিসেম্বর/এলএ)