নরসিংদীর জুটমিলে অনশনে অসুস্থ ১৭ শ্রমিক

প্রকাশ | ১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৮:৪২

নরসিংদী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

মজুুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে আমরণ অনশনে বসা নরসিংদীর ইউএমসি জুটমিলের ১৭ শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

আমরণ অনশনের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন ১৭ শ্রমিক। এর মধ্যে ১১ জনকে হাসপাতালে ও বাকিদেরকে অনশনস্থলেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার থেকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল শ্রমিক সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে এ অনশন শুরু করেন পাটকল শ্রমিকরা।

অসুস্থ হয়ে পড়া শ্রমিকদের মধ্যে নরসিংদী সদর ও ১০০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তিকৃতরা হলেন-মো. ফুয়াদ, মো. আব্দুর রব, মো. রুবেল, মো. কামাল হোসেন, মো. আলী আকবর, চাঁন মিয়া, মো. সফিউদ্দিন, সামসুল হক, রাজিয়া বেগম, বিল্লাল হোসেন ও আলী হোসেন।

ইউএমসি জুটমিলস শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন নরসিংদীর সভাপতি মো. সফিকুল ইসলাম মোল্লা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, রাতভর শীত উপেক্ষা করে কাঁথা বালিশসহ অনশন স্থলে অবস্থান করছেন শত শত শ্রমিক। সকালেও দেখা গেছে শীত উপেক্ষা করে ঘুমিয়ে রয়েছেন শ্রমিকরা। টানা অনশনের ফলে বয়স্ক শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের অনশনস্থলেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়াদের হাসপাতালে নিয়ে যান শ্রমিকরা।

এদিকে আমরণ অনশনে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে জুটমিলে।

মিলের উৎপাদনবন্ধ হওয়াসহ প্রবেশ করতে পারছে না পাটবাহী কোনো ট্রাক। প্রবেশ করতে পারছেন না জুটমিলের কর্মকর্তারাও।

অনশনের সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে গত দুইদিন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় অনশনস্থলে পরিদর্শনে আসেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর নরসিংদী কার্যালয়ের উপ-মহাপরিদর্শক মো. আতিকুর রহমান।

এ সময় তিনি শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে কাজে যোগ দেয়ার অনুরোধ করেন এবং হাসপাতালে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া শ্রমিকদের খোঁজ খবর নেন। তিনি জানান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় মজুরি কমিশনসহ শ্রমিকদের দাবির বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু শ্রমিকরা তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চলবে বলে জানান।  

অনশন কর্মসূচিতে শ্রমিক নেতারা জানান, ২০১৫ সালে ঘোষণা দিয়েও মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন না হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করছেন শ্রমিকরা। মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, ১১ সপ্তাহের বকেয়া বেতন পরিশোধ, পিএফ’র টাকা প্রদান, বদলি শ্রমিকদের স্থায়ীকরণসহ ১১ দফা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি। যা সরকার মানছে না। এ জন্য বাধ্য হয়ে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিকরা। ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য আমরণ অনশন ধর্মঘটে মিলের সকল শ্রমিক স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছে।

মঙ্গলবার বিজেএমসিতে আলোচনায় সমাধান না হওয়ায় সমস্যা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ করেছেন শ্রমিক নেতারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান শ্রমিক নেতারা।

ঢাকাটাইমস/১২ডিসেম্বর/ইএস