২০৫০ সালে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামাতে একমত ইইউ

প্রকাশ | ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৪:০৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস

কয়লা-নির্ভরশীল দেশ পোল্যান্ডকে ছাড়াই ইউরোপে ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার পরিকল্পনায় একমত হয়েছেন ইইউ নেতারা। নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাতে পোল্যান্ডকে আগামী সম্মেলন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।

ব্রাসেলসে ম্যারাথন আলোচনার পর শুক্রবার ইইউ নেতারা ওই পরিকল্পনায় মতৈক্যে পৌঁছাতে সক্ষম হন।

ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট শার্লস মিশেল বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে আমরা একটি চুক্তিতে উপনীত হয়েছি, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে ইউরোপের দৃঢ় সংকল্প বোঝাতে এ চুক্তি জরুরি ছিল।’

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধে ২০১৫ সালে প্যারিসে স্বাক্ষরিত জলবায়ু চুক্তির অন্যতম লক্ষ্যগুলোর একটি ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা। ইইউ নেতারা ইউরোপকে এই লক্ষ্যপূরণ করা প্রথম মহাদেশ হিসেবে দেখতে চায়।

প্যারিস চুক্তিতে বিশ্বনেতারা বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রাক-শিল্পায়ন যুগের পর্যায়ের ওপরে সর্বোচ্চ দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে একমত হয়েছিলেন। ওই লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য ইইউর দেশগুলোকে অবশ্যই কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে হবে। এজন্য তাদের জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করা ছাড়াও আরো কোন কোন উৎস থেকে কার্বন নিঃসরণ হয় তা খুঁজে বের করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

পোল্যান্ডের জন্য এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন অত্যন্ত কঠিন। কারণ দেশটির মোট জ্বালানির ৮০ শতংশের উৎস কয়লা। যে কারণে তারা শুরু থেকেই এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে এসেছে।

শুক্রবার এ নিয়ে কয়েক ঘণ্টা ধরে বিতর্কের পর দেশটি শেষ পর্যন্ত ওই পরিকল্পনা থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়। পোল্যান্ড সরকারের যুক্তি, তাদের আরও সময় প্রয়োজন।

পলিশ প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোহাভিয়স্কি বলেন, ‘ইউরোপের বিভিন্ন অংশের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। কিন্তু সেখানে একটি দেশের এখনো আরো কিছুটা সময় প্রয়োজন।’

ইইউ নেতারাও পোলান্ডকে আরও কিছুটা সময় দিতে চান। জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সাংবাদিকদের বলেন, পোল্যান্ডের হাতে ২০২০ সালের জুন পরবর্তী সম্মেলন পর্যন্ত সময় আছে। ওই সময়ের মধ্যে তারা লক্ষ্যপূরণের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিতে পারবে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকেও পোল্যান্ডকে দলে টানতে ইইউ নেতারা কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন।

তবে শুধু পোল্যান্ডই নয় চেক রিপাবলিকও ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। পরে যখন বলা হয়, দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ কমাতে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে পরমাণু শক্তি ব্যবহার করতে পারবে, তখন চেক সরকার আপত্তি তুলে নেয়।

বিজ্ঞানীরা অবশ্য প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রাক-শিল্পায়ন যুগের পর্যায়ের ওপরে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে হলে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার নাটকীয়ভাবে হ্রাস করতে হবে বলে সতর্ক করেছেন।

২০১৮ সালে প্রকাশিত ইইউর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী গত দুই দশকে ইইউভূক্ত দেশগুলোতে কার্বন নিঃসরণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমেছে। তারপরও প্রতিবছর তারা ৯ দশমিক ৬ শতাংশ হারে কার্বন নিঃসরণ করে।

ঢাকা টাইমস/১৪ডিসেম্বর/একে