ঢাকাটাইমসের সংবাদে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা মিলল মির্জাপুরের সেই বীরাঙ্গনার

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:২৫

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের সেই বীরাঙ্গনা ববিজান বেওয়া অবশেষে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা পেয়েছেন। রবিবার টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তার নামের ভাতার চেক হস্তান্তর করা হয়। পরে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মালেক ববিজানের হাতে ৮২ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করেন।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মঈনুল হক, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি কমান্ডার সিদ্দিকুর রহমান, ভাতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজাহারুল ইসলাম।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন ববিজান বেওয়া। ববিজান বেওয়া মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের বাঁশতৈল পশ্চিমপাড়া গ্রামের হারাদন আলীর মেয়ে।

২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর ‘মির্জাপুরের বীরাঙ্গনা ববিজানের দুঃখগাথা’ শিরোনামে ঢাকাটাইমসে স্বচিত্র একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে তা ওই সময়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারীর নজরে আসে। তিনি টাঙ্গাইলের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. মাহাবুব হোসেনকে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

দীর্ঘ যাচাই-বাছাই শেষে ঢাকা টাইমসে প্রকাশিত খবর সত্য প্রমাণিত হলে চলতি বছর জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৬২তম সভায় ববিজান বেওয়াসহ ৪৬ নারীকে বীরাঙ্গনা খেতাব দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়।

প্রসঙ্গত, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী ববিজান বেওয়াদের গ্রামে ঢুকে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক বিএসসিসহ আরও কয়েকজনের বাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। ওইদিনই পাকবাহিনীর সদস্যরা বাড়িতে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ববিজানসহ আরও কয়েকজন নারীকে পাশবিক নির্যাতন চালায়। অস্ত্রের ভয় আর পাশবিক নির্যাতনে জ্ঞান হারান তিনি। ধর্ষিতা হওয়ার অপরাধে স্বামীর সংসার ছাড়তে হয় তাকে। সরকারি জমিতে ঘর তুলে বসবাস করতে থাকেন তিনি। বয়স হওয়ায় এখন কানেও শোনেন না তেমন, স্মৃতিশক্তিও কমে গেছে। স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি পাননি ববিজান। পাননি বয়স্ক বা বিধবা ভাতা বা সরকারি কোনো সযোগ-সুবিধাও। উল্টো পেয়েছেন মানুষের লাঞ্ছনা, ঘৃণা, অপবাদ। ববিজানের জীবনের এসব ঘটনা তুলে ধরে ঢাকাটাইমসে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে অবশেষে চলতি বছর ববিজান বেওয়া বীরাঙ্গনা খেতাব পান।

ববিজান বলেন, সাংবাদিক আমাকে নিয়ে লেখার কারণে ‘দীর্ঘদিন পর হলেও বীরাঙ্গনা খেতাবও ও সম্মানি ভাতা পেলাম। এজন্য তিনি সাংবাদিক জাহাঙ্গীর হোসেনসহ তৎকালীন মির্জাপুরের ইউএন মাসুম আহমেদ, তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. মাহাবুব হোসেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারীরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বলেন, গেজেট প্রকাশের দিন থেকে তার নামে ভাতা চালু হয়েছে। সেই হিসেবে বকেয়া ছয় মাস ও বিজয় দিবসের উৎসব ভাতাসহ বীরঙ্গনা ববিজানের হাতে ৮২ হাজার টাকার চেক হন্তান্তর করা হলো।

(ঢাকাটাইমস/১৫ডিসেম্বর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :