ঈশ্বরদীতে আ.লীগ-যুবলীগে সংঘর্ষ, আহত ১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা
 | প্রকাশিত : ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ২০:০৬

পাবনার ঈশ্বরদীতে বিজয় দিবসের শোভাযাত্রা বের করা নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ-যুবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিজয় দিবস উপলক্ষে ঈশ্বরদী পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর নেতৃত্বে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীরা সকাল ১১টার দিকে একটি বিজয় শোভাযাত্রা বের করেন। একই সময়ে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমাল ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনির নেতৃত্বে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রা ঈশ্বরদী মহিলা কলেজের কাছাকাছি পৌঁছালে দুই গ্রুপ মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ বাঁধে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হলে তাদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত আব্দুল মতীন, মতলেব হোসেন, আবু সাঈদ ও ইলিয়াস হোসেনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জুবায়ের বিশ্বাস বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে ঈশ্বরদী পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা ও যুবলীগ-ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীরা একটি বিজয় শোভাযাত্রা বের করে। শোভাযাত্রাটি ঈশ্বরদী মহিলা কলেজের কাছাকাছি পৌঁছলে সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর পুত্র উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমাল ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনির নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী অতর্কিতভাবে আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমান বিশ্বাসের উপর হামলা চালায়। এ সময় আমরা তাকে বাঁচাতে গেলে সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিশোঠা দিয়ে ব্যাপক মারপিট করে। এতে আমিসহ আমার পিতা মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমান বিশ্বাস, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতীন, সাংগঠনিক সম্পাদক মতলেব হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদসহ অন্তত ১৫ জন আহত হই। আহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরিফ তমালের সাথে মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি, তবে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমরা কারোর উপর হামলা চালাইনি। মুক্তিযোদ্ধার উপর হামলা করার প্রশ্নই ওঠে না। বরং পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর নির্দেশে পুলিশ অহেতুক আমাদের শোভাযাত্রায় হামলা করে নেতাকর্মীদের মারপিট করেছে।

ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বলেন, পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাদের বিজয় দিবসের শোভাযাত্রায় হামলা করে রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ নেতাকর্মীদের আহত করা হলো। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই ও বিচার দাবি করি। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতেই এই ন্যক্কারজনক হামলা করেছে। পুলিশের সামনে সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করলেও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাহাউদ্দিন ফারুকী জানান, স্থানীয় রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জুবায়ের বিশ্বাস ও এমপি পুত্র তমালের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এরই জেরে বিজয় দিবসের র‌্যালিতে উত্তেজনা ও সামান্য হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/৬ডিসেম্বর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :