একটি কম্বল দিয়ে আপনিও দাঁড়াতে পারেন ওদের পাশে

মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খাঁন
| আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:১২ | প্রকাশিত : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ২০:০৬
মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খাঁন

সুরভী চলে গেছে আজ প্রায় ১০ দিন। ঢাকা থেকে এসে যাবো যাবো করেও কাজের চাপে যেতে পারিনি। আজ সুযোগ পেলাম। সুরভীর বাড়ির রাস্তা ধরে যখন হাঁটছি তখন মনটা আরো খারাপ হয়ে গেল। প্রথম যেদিন আসি সুরভীকে শেকলমুক্ত করতে সেদিন শখানেক লোক ছিল, আজ একদম নীরব, রাস্তার পাশেই দাদার কবরের পাশে শুয়ে আছে সুরভী। বাড়ির উঠানে ঢুকতেই দেখতে পেলাম সিমেন্টের খুটিটা এখনও নিশ্চল দাঁড়িয়ে আছে, যাতে সুরভীকে বেঁধে রাখা হতো। সেই শেকল খুলে সুরভীকে মুক্ত করেছিলাম।

সুরভীর মা-দাদিকে কী বলবো খুঁজে পেলাম না। জানলাম ঠান্ডায় শ্বাসকষ্ট হয়েই সুরভীর মৃত্যু হয়েছে। চুপ করে ছিলাম কিছুক্ষণ। সুরভীর মায়ের কোলে আরো একটি ছোট শিশু। আজকে কুড়িগ্রামে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই শীতেও এখানকার অধিকাংশ শিশু পাতলা জামা গায়ে ঘুরছে।

সুরভীর কবরের পাশে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলাম, অন্ধকার কবরে শুয়ে থাকা সুরভী কি শীতে কষ্ট পাচ্ছে? জানি না। সুরভীর ফুপাতো ভাই হলুদ জামা পরে পেয়ারা খেতে খেতে আমার সাথেই হাঁটছিল, দুষ্টুমি করে কানটা টেনে দিলাম, কানে হাত দিয়ে দেখি বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে আছে।

সুরভীর মতো আরো অনেক শিশুর কষ্ট বাড়াতে অপেক্ষা করছে কুড়িগ্রামের প্রচণ্ড শীতের কনকনে বাতাস। আল্লাহ ওদের হেফাজত করুন। ওদের জন্য একটি কম্বল কিনে দিয়ে আপনিও এই হেফাজতের শরিক হতে পারেন। ইতিমধ্যেই অনেকেই কম্বল কেনার জন্য আমার কাছে টাকা পাঠিয়েছেন, শিগগির আপনাদের ভালোবাসার সাথে জেলা পুলিশ কুড়িগ্রামের ভালোবাসা এক করে ওদের কাছে পৌঁছে দিবো আমরা।

লেখক: পুলিশ সুপার, কুড়িগ্রাম

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :