মাদারীপুরে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর
 | প্রকাশিত : ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ২০:১৫

‘আমার বাবা ভারতের আগরতলা বাগমারা প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিল। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ সব কিছু ঠিকঠাক উপস্থাপনের পরও শুধুমাত্র বাছাই কমিটির প্রধান শাজাহান খান এমপির বিরোধিতায় আমার বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়নি’- এমন আক্ষেপের সাথে কথাগুলো বললেন মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও মৃত মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেনের মেয়ে রেহানা পারভীন লীপা।

পারভীন লীপা আরো বলেন, ‘আমার পরিবারে একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাসহ পাঁচজন মুক্তিযোদ্ধা। আমরা আওয়ামী পরিবারের সদস্য, আমরা সবাই আওয়ামী লীগ করি, তবে শাহাজান খান গ্রুপ করি না বলেই শাজাহান খান ইচ্ছা করেই যাচাই বাছাইয়ের প্রধান হিসেবে আমার বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করতে দেননি।’

অভিযোগে জানা গেছে, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার খাশেরহাটের উত্তর ছয়গাঁও গ্রামের আলী হোসেনের মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে তার আবেদন নম্বর ডিজিআই ১৫৬৮০৪। জেলা কমান্ডার, উপজেলা কমান্ডার ও তার সহযোদ্ধা তিনজন তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও আলি হেসেনের নাম অন্তর্ভূক্ত হয়নি।

আলী হোসেনের স্ত্রী লুৎফা হোসেন জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার স্বামী দেবররা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ায় সংসার ধর্ম পালন করতে পারেনি। নৌকায় নৌকায় পালিয়ে বেড়িয়েছে। আমার স্বামী ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে এসে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। পরিবারের ছয়জন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ায় স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় আমাদের ঘরবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও আগুন দেয়া হয়। এই ঘটনা এলাকাবাসী জানে। আমার স্বামীর পরিবারে একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মজিদ ও সনদধারী মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক, আবুল কালাম, আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচিত এমপি মতিউর রহমান ও হানিফ মাহমুদ এই পরিবারেরই সদস্য। একই পরিবারের একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও পাঁচজন মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় পাক সেনারা স্থানীয় রাজাকারদের নিয়ে আমদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। ২০১৭ সালে আমার স্বামী মৃত্যুবরণ করেন। দুঃখের বিষয় তিনি জীবিত থাকাবস্থায় মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেখে যেতে পারেননি। ভেবে ছিলাম তার মৃত্যুর পরে হয়তো স্বীকৃতি মিলবে, কিন্ত তাও তো হলো না। আমারও বয়স হয়েছে। হয় তো এই দুঃখ নিয়ে আমারও চলে যেতে হবে।’

এ ব্যাপারে শাজাহান খান এমপির মোবাইলে বারবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের একাধিক নেতা জানান, গত ৬ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় রেহানা পারভীন এ প্রসঙ্গটি উত্থাপন করলে এমপি তা এড়িয়ে যান।

(ঢাকাটাইমস/১৯ডিসেম্বর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :