‘ইলিপের দরকার নাই...’

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুড়িগ্রাম
| আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৬:০৭ | প্রকাশিত : ২০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৫:৫৯

কুড়িগ্রামের পাঁচগাছী ইউনিয়নের শুলকুর বাজার গড়েরপাড় বাসিন্দা রহিমা বেগম, বুলবুলি আক্তারসহ অনেকেই বলেন, ‘হামরা মাটি কাটিয়া ২০০/২৫০ টাকা হাজিরা পাই। যে শীত পড়ছে ঘর থাকি বের হবার পাই না। মাঠে তেমন কাজ নাই। ছোঁয়া পোয়া নিয়ে তান্নাৎ পড়ি আছি। শীতবস্ত্রসহ ইলিপের (ত্রাণ) দরকার নাই হামার এটিকার মাইনষের। হামরা কাম করি চলবার পাই। কিন্তু এবার শীতে একনা বেশি কষ্ট হবাইছে জিনিসের দাম বেশি হওয়ায়। সরকার জিনিসের দাম কমবারও পায় না হামারও মুজুরি বাড়ায় না। হামার ত্রাণের দরকার নাই। বাহে তোমরা হামার মজুরি বাড়বার কন, না হলে জিনিসপত্রের দাম কমবার কন সরকারক।’

ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার নদীবেষ্টিত যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুরের বাসিন্দা মজিবর আলী, রহিম উদ্দিন বলেন, ‘বাহে এবার পৌষের আগাম শীত আসায় হামরা চরের মানুষজন খুবই কষ্টে আছি। দিন হাজিরা দিয়া চলি। দিনে ৭-৮ ঘণ্টা কাজ করে ৩৫০/৪০০ টাকা হাজিরা পাই। এই টাকা দিয়া সংসারের খরচাদি করি। সূর্য না ওঠার আধা বেলার জন্য কেউ কেউ কাজে নিতে চাই না। এজন্য কাজকর্ম কমে গেছে। টুকটাক কাজ জুটলেও মজুরি তেমন মিলে না। যে মজুরি পাই সেই টাকায় সংসার চালানো দায়। তার উপর তরিতরকারির যে দাম। ক্যামনে শীতের কাপড়চোপড় করি। বাধ্য হয়ে পুরাতন যা তা দিয়েই শীত পার করার চেষ্টা করছি।’

ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে উত্তরের জনপদ কুড়িগ্রাম। মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। গত তিন দিন ধরে জেলায় সূর্য্যরে দেখা মিলছে না। দিনে মেঘাচ্ছন্ন আকাশে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির। কুয়াশার সাথে বইছে হিমেল হাওয়া। ফলে রাত কিংবা দিনের প্রচণ্ড ঠান্ডায় নাকাল কুড়িগ্রামের মানুষজন। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে ১৬টি নড়-নদীর তীরবর্তী ৫২০টি চরের প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক চরাঞ্চলবাসীসহ নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ।

শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। হাপানি, নিউমোনিয়া, হৃদরোগসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। গবাদিপশুও রেহাই পাচ্ছে না শীতের তীব্র ঠান্ডা হতে। টানা কয়েকদিনের শীতের তীব্রতা বাড়ায় কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছে শীতার্ত মানুষ। বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে, ফুটপাত এবং স্বল্পমূল্যের পুরাতন কাপড়ের দোকানগুলোতে। নিজেদের সাধ্যমত কিনছে শীতবস্ত্র। সন্ধ্যার পরপরই গ্রাম ও শহরের দোকানগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ক্রেতা সংকটে। প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। দিনে বা রাতে অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের জন্য চেষ্টা করছে।

(ঢাকাটাইমস/২০ডিসেম্বর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :