স্ত্রীর লাশ ফেলে স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালালেন স্বামী
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে গর্ভবতী স্ত্রীর লাশ রেখে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল ১১টায় ইয়াছমিন আক্তার সেতু নামে এক গৃহবধূকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার স্বামী আবদুস সালাম ও শাশুড়ি।
খবর পেয়ে নিহত ইয়াছমিনের এক আত্মীয় স্কুলশিক্ষক আলী হাসপাতালে এলে ইয়াছমিনের লাশ হাসপাতালে রেখে কৌশলে পালিয়ে যান স্বামী ও শাশুড়ি, ভাই ও বোন।
নিহত গৃহবধূ ইয়াছমিন আক্তার সেতু উখিয়া উপজেলার পূর্ব দরগাবিল বাগানপাড়া এলাকার রফিক উদ্দিনের মেয়ে এবং সোনারপাড়া এলাকার আবদুস সালামের স্ত্রী।
নিহত ইয়াছমিনের মা সদর হাসপাতালের মর্গের সামনে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘ইয়াছমিনের বিয়ে হয়েছে মাত্র ১০ মাস। তারমধ্যে তার মেয়ে এখন ৮ মাসের গর্ভবতী। ইয়াছমিনকে স্বামীর মা, ভাই ও বোনসহ ব্যাপক মারধর করে গলাটিপে হত্যা করেছে।
তিনি আরো বলেন, তার মেয়ের জামাই অত্যন্ত ভালো ছিল, কিন্তু মা ও ভাইয়ের সাথে ইয়াছমিনের ঝগড়ার কথা বলে বারবার মারধর ও জ¦ালাতন করত। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে আবদুস সালামের বাড়িতে হত্যা করে ইয়াছমিনকে। বুধবার ভোরে খবর পেয়ে ইয়াছমিনকে কোর্টবাজার অরিজিন হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘মেয়ের জামাই আবদুস সালাম ও তার পরিবারের লোকজন আমার মেয়েকে মেরে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’
নিহত ইয়াছমিনের ভাই তোফাইল বলেন, আমার বোনকে পরিকল্পিত হত্যা করেছে। নাহলে হাসপাতাল থেকে তারা কেন পালিয়ে গেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ইয়াছমিনের গলায় থাকা এক ভরি ওজনের একটি চেইনসহ নাক, কান ও হাতে থাকা স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে গেছে স্বামী ও স্বজনরা।
এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শাহিন আবদুর রহমান বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ইয়াছমিনের মৃত্যু হয়েছে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল মনসুর বলেন, এরকম একটি ঘটনা শোনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তে এটি হত্যা প্রমাণ মিললে গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা গ্রহণ করা হবে।
(ঢাকাটাইমস/২৫ডিসেম্বর/এলএ)