বাবুস সালাম মসজিদ রক্ষার আহ্বান

প্রকাশ | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৬:১৪ | আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৬:১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

টাকা আত্মসা’কারী মুশতাক গংয়ের হাত থেকে বাবুস সালাম, মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানাকে রক্ষা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন এর প্রতিষ্ঠাতারা।

শনিবার বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সিভিল এভিয়েশনের চাকরিচ্যুত চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী মুশতাক হোসেন রতন, তার মেয়ের জামাতা সোহেল এবং ভাগ্নি জামাতা মো. মোবারক হোসেন এরই মধ্যে মাদরাসা-এতিমখানার ৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এ বিষয়ে ব্যাপারে মামলা দায়েরের পর মুশতাক ও তার সহযোগীরা কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর পুনরায় মাদরাসা-এতিমখানা দখলে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চালিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের কৌশল নিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল মাওলানা মো. আনিছুর রহমান। এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মাদরাসা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মফিজ উদ্দিন আহমেদ বেপারী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলহাজ্ব জসিম উদ্দিন, মাদরাসার শিক্ষা সচিব মুফতি রফিকুল ইসলাম, হল সুপার মাওলানা তানভিরুল হক সিরাজী প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে মো. আনিছুর রহমান বলেন, ১৯৯৭ সালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর গোলচত্বরে প্রতিষ্ঠিত  বাবুস সালাম মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানায় বর্তমানে ৫০০ জন এতিম গরিব ছাত্র নূরানী, মক্তব থেকে দাওরায়ে হাদিস পর্যন্ত বিনা বেতনে পড়াশোনা করছে। প্রতিষ্ঠানটিতে ৩৭ জন শিক্ষক রয়েছেন। সাধারণ জনগণের যাকাত, ফেৎরা, দান ছাড়াও মাদ্রাসা ভবনের কিছু দোকান থেকে প্রাপ্ত ভাড়ার আয় দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ হচ্ছিল। প্রতিষ্ঠা কাল থেকেই পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হিসেবে মুশতাক হোসেন রতন আয়-ব্যয়ের হিসাব নিজের কাছে রাখার সুবাদে রক্ষক থেকে ভক্ষক হয়ে ওঠেন।

মুশতাক হোসেন রতন মাদরাসার বেশিরভাগ দোকান স্বনামে-বেনামে তার জামাতা, ভাগ্নি জামাতাসহ নিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের নামে নামমাত্র মূল্যে ভাড়া দেখিয়ে চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন। পরে সেগুলো বিভিন্ন লোকের নিকট কয়েক গুণ বেশি টাকা ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা পকেটস্থ করেছেন। এছাড়া মসজিদের সম্পত্তিতে মোবাইল টাওয়ার এবং সাইনবোর্ড ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অন্যদিকে মসজিদ-মাদ্রাসার নামে আদায়কৃত দানের টাকারও হিসাব নেই।

আনিছুর রহমান জানান, পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হওয়ার সুবাদে মুশতাক হোসেন রতন সহযোগীদের নিয়ে মাত্র ছয় বছরে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। প্রাথমিক হিসেবে প্রায় ৭ কোটি টাকা গড়মিলের তথ্য মিলেছে। তবে সুষ্ঠু তদন্ত করলে আত্মসাতের পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, টাকার অভাবে মাদরাসার ছাত্রদের ঠিকমত ভরণ-পোষণ করা যাচ্ছে না। এদিকে মাদরাসার শিক্ষকদেরও ৫ মাসের বেতন-ভাতা বকেয়া থাকায় শিক্ষকরাও পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। অথচ এতিমদের টাকা মেরেই রতন এবং তার সহযোগীরা আয়েশী জীবন-যাপন করছেন। এই পরিস্থিতিতে থানায় মামলা করা হলে রতন ও তার সহযোগীরা তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এমনকি মাদরাসা-এতিমখানা দখলে নিতে নতুন করে চক্রান্ত শুরু হয়েছে বলে আনিছুর রহমান অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে জনৈক নাজমুল আজম প্রিন্স একটি ভূয়া ভাড়াটিয়া দলিল দেখিয়ে নিজেকে দোকানদার দাবি করে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। অথচ তথাকথিত দলিল মুশতাককে মোতাওয়াল্লি হিসেবে হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণার ৫ মাস পর সম্পাদন করা হয়েছে। চক্রান্তকারীরা তাদের অপতৎপরতায় বাধা মনে করেই ৪৯ নং ওর্য়াড কাউন্সিলার ও মহানগর উত্তরের সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান নাঈমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিডিয়ায় মিথ্যা ও বানোয়াট খবর দিয়ে এবং মানব বন্ধন ও সাংবাদিক সম্মেলন করে তার সম্মানহানির অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। আনিছুর রহমান নাঈম কমিশনার হওয়ার পূর্ব থেকে অত্র প্রতিষ্ঠানের একজন  ভাড়াটিয়া এবং নিয়মিত ভাড়া পরিশোধকারী।

জামিয়া বাবুস সালাম মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানার মার্কেটে কাউন্সিলরের কোন প্রকার দখলদারিত্ব নাই। বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/২৯ডিসেম্বর/এজেড)