অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার পেলেন নাদিরা মজুমদার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯, ২২:০২ | প্রকাশিত : ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ২০:৪৯

অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার-১৪২৬ পেলেন বিজ্ঞানমনস্ক লেখিকা নাদিরা মজুমদার। রবিবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তার হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞান ও রাজনৈতিক বিষয়ে লেখালেখি করে নাদিরা মজুমদার ইতিমধ্যে লেখক সমাজসহ পাঠক সমাজে ব্যাপক জনপ্রিয়তা কুড়িয়েছেন।

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অ্যামিরেটেস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইব্রাহিম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সমাজসংগঠক ও লেখিকা মালেকা খান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘তার লেখায় বিজ্ঞান ও রাজনীতি যেভাবে উঠে এসেছে তা খুব কম লেখকই দেখাতে পেরেছেন। তিনি এত সাবলীল ও সহজ ভাষায় বিজ্ঞানের মতো অতিপ্রয়োজনীয় এবং রাজনৈতিক বিষয়কে যেভাবে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন তা নিসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। বিজ্ঞানমনস্ক একজন মানুষ হিসেবে তার রাজনৈতিক বিশ্লেষণগুলোও অসাধারণ।’

অন্যান্য প্রতি বছর সাহিত্যে যে পুরস্কারটি দিয়ে থাকে তার প্রত্যেকটি নির্বাচনই অসাধারণ এবং এবার নাদিরাকে যে পুরস্কারটি দেওয়া হলো সেটা যথাপাত্রেই দেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন সিরাজুল ইসলাম।

অনন্যা সাহিত্য পত্রিকা সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমার স্ত্রী প্রয়াত নাজমা জেসমিন চৌধুরীর প্রথম উপন্যাস ছাপা হয়েছিল অনন্যায়। শুধু তাই নয়, তার বিশেষ গল্পটিও ছাপা হয়েছিল অনন্যায়। সেই হিসেবে অনন্যার প্রতি অন্য রকম একটা ভালোলাগা ও ভালোবাসা কাজ করে।’

ড. মোহাম্মদ ইব্রাহিম তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমি নাদিরার সরাসরি শিক্ষক বটে। কিন্তু আমরা খুব সময়ের মধ্যে সহকর্মী হয়ে উঠে ছিলাম। আমার সাথে তার পরিচয় হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তখন থেকেই বিজ্ঞান বিষয়ে তার যে আগ্রহ দেখেছি সেটা খুব বিরল। নাদিরার লেখালেখির ওপরে আমার অনেক প্রভাব রয়েছে। তবে সেও আমার ওপরে প্রভাবিত।’

নাদিরার জেন্ডার বৈষ্যমের লড়াইয়ের কথা বলতে গিয়ে মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘জেন্ডার সচেতনতা এখন হয়তো আমরা অহরহ দেখি। কিন্তু নাদিরা যে সময়ে জেন্ডার বিষয়ে কথা বলেছে, কাজ করেছে সেটা খুব কঠিন সময় ছিল। সে তার সেই আন্দোলনে দেখাতে চেয়েছে যে, কত প্রতিকূলতার মধ্যে নারীকে বেঁচে থাকতে হয়। কীভাবে অধিকার আদায় করতে হয় সে সময় সে দেখিয়েছে। তার এই কাজটি ওই সময়ে ছিল খুবই বৈপ্লবিক একটি কাজ।’

‘তার পরিবারের বাইরে গিয়ে সে যেভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, নিজের বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল তা ছিল বিস্ময়কর যা এখন কল্পনা করা যায় না।’

সভাপতির বক্তব্যে মালেকা খান বলেন, ‘নাদিরা মজুমদারের লেখা খুব বেশি আমার পড়া হয়নি। তবে যতটুটকু পড়েছি তার মধ্যে বিজ্ঞানমনস্ক লেখক নারীদের মধ্যে খুবই কম। সে তার লেখা দিয়ে যুগের পর যুগ বেঁচে থাকবে। তার পাঠকরা তার কাছে আরও বেশি প্রত্যাশা করে। আজকের এই পুরস্কার প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে সবাই নাজিরা থেকে আরও বেশি পরিমাণে লেখা প্রত্যাশা করে। নাজিরার এই পুরস্কার আমাদের প্রত্যাশা আরও বাড়িয়ে দিল। তাকে অভিনন্দন জানাই।’

মালেকা খান বলেন, ‘ নাদিরা পিতৃতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে যেভাবে বিরোধিতা করেছেন তা আসলে অনেক সাহসিকতার পরিচয়। নাজিরা বাংলাদেশ থেকে প্রাগে গিয়ে সেখানে স্থায়ী হয়েছেন। কিন্তু সেখানে গিয়েও তিনি তার লেখায় বাংলা ভাষায় যে চর্চা করেছেন সেই হিসেবে তিনি আমাদের খুব কাছের মানুষ হিসেবে এখনও খুব প্রাসঙ্গিক।’

অনুষ্ঠানে পুরস্কারের অংশ হিসেবে নাদিরা মজুমদারকে একটি ক্রেস্ট, প্রশংসাপত্র ও নগদ এক লাখ টাকার একটি সম্মানী চেক দেওয়া হয়। অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার বাংলা ১৪০১ সন থেকে প্রবর্তিত হয়।

(ঢাকাটাইমস/২৯ডিসেম্বর/এইচএফ/এনআই/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :