কাল পর্দা উঠছে বাণিজ্য মেলার

বিদেশি ক্রেতা টানার আশায় বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশ | ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯, ২০:৪২ | আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:৫৯

জহির রায়হান, ঢাকাটাইমস

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পর্দা উঠছে আগামীকাল। রাজধানীর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সকাল দশটায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাসব্যাপী এই মেলার উদ্বোধন করবেন। এটি মেলার ২৫তম আসর। এবারের মেলায় বাংলাদেশসহ ২১টি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪৮৩টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল থাকবে।

মঙ্গলবার মেলা প্রাঙ্গনে এক সংবাদ সম্মেলনে মেলার সর্বাঙ্গিন প্রস্তুতি বিষয় সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। আগারগাঁও থেকে এখনই পূর্বাচলে মেলা সরানোর চিন্তা নেই বলে তিনি জানান।

মেলার যে অব্যবস্থাপনা তাতে এই মেলাকে আন্তর্জাতিক মানের বলা যায় কি-না প্রশ্নে বণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এতদিন দেশীয় মার্কেটের চাহিদার কথা বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন থেকে কীভাবে বিদেশি ক্রেতাদের মেলায় আনা যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এবার এর সুফল না পেলেও আগামীবার থেকে পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।’

টিপু মুনশি বলেন, ‘দেশীয় পণ্য কিভাবে বাইরের দেশে রপ্তানি করতে পারি তার পদক্ষেপ নিচ্ছি। এখানে একটু দুর্বলতা আছে। এখন যেটা আমাদের রপ্তানি পণ্যের সঙ্গে রিলেট করে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর  সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। সেই বিবেচনায় ইপিবির সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রথমে মেলার সৌন্দর্য বাড়ানো হবে। আন্তর্জাতিক ক্রেতারা যদি আসে তারা প্রথমেই চাইবে পরিবেশটা যেন ঠিক থাকে। সবমিলিয়ে আমরা চিন্তা করছি ঘুরে দাড়ানোর।’

এবছর বড় ধরণের পরিবর্তন না এলেও আগামী বছর হতে পদক্ষেপের ফল দেখা যাবে বলেও মন্তব্য করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

গতবারের বাণিজ্য মেলা শুরুর আগের দিন তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ঘোষণা দিয়েছিলেন ২০২০ সাল থেকে ঢাকার পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা হবে।

এ বিষয়ে টিপু মুনশি বলেন, ‘পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থায়ী ঠিকানা নির্ধারণ করা হলেও সেখানে এখন তা আয়োজনের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই। শিগগির সেখানে বাণিজ্য মেলা করা সম্ভব নয়। এ জন্য আরও সময় লাগবে। আগামী দুই বছরেরও সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়।’

গতবার মেলা প্রাঙ্গণে ফুটপাতের মতো অনেকটা হকারি করার মতো পণ্য বিক্রি হয়। কেবল অবৈধভাবে বসা স্টলের সামনের দোকানগুলোই নয়, ক্রেতা আকর্ষণের এমন আহ্বান ছিল নামিদামি স্টলগুলোরও। আবার বিদেশি প্যাভিলিয়নগুলোর পণ্যের মান নিয়ও প্রশ্ন ছিল। বিদেশি প্যাভিলিয়নের বহুস্টলে দেশি পণ্য বিক্রি হওয়ার অভিযোগ ছিল। এজন্য বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও  মেলা কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বানিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এবার আর এমন হবে না। দেশীয় স্টলে বিদেশি পণ্য বিক্রি করা যাবে না।  এ বিষয়ে মনিটরিং করা হবে। হকার যেন না থাকে মেলায়।’

আয়োজক সূত্র জানায়, দর্শনার্থীদের জন্য মেলা প্রাঙ্গণ প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। মেলায় প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন রাখা হয়েছে ৬৪টি। সাধারণ প্যাভিলিয়ন ১৩টি, সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়ন ৫৯টি ও প্রিমিয়াম মিনি প্যাভিলিয়ন ৪২টি।

মেলা প্রাঙ্গণে রেস্তোরাঁ থাকবে দুটি, স্ন্যাকস বুথ সাতটি, প্রিমিয়ার স্টল ৮৪টি, সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন ছয়টি, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন আটটি, সাধারণ স্টল ১০৭টি এবং ফুড স্টল রাখা হয়েছে ৩৫টি। পাশাপাশি বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৭টি, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ১১টি এবং বিদেশি প্রিমিয়াম স্টল ১৭টি।

বাড়ল টিকিটের দাম

এবার মেলায় প্রবেশে টিকিটের দাম বাড়ানো হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিটি টিকিটের দাম বাড়ানো হয়েছে ১০ টাকা। প্রাপ্তবয়স্কদের টিকিটের মূল্য ৪০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৩০ টাকা। তবে অপ্রাপ্তবয়স্কদের টিকিটের মূল্য আগের মতোই ২০ টাকা রাখা হয়েছে।

টিকিটের দাম বাড়ানোর কারণ জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগে এক কাপ চা ছিল তিন টাকায়, এখন পাঁচ টাকা লাগে। মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। এছাড়া মেলায় এবার স্টলের সংখ্যা কমেছে। রেভিনিউয়ের বিষয়টি মাথায় রেখে এবার টিকিটের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৩১ডিসেম্বর/জেআর/ডিএম)